২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৩৫
শিরোনাম:

নকল বিদেশি মদ বিক্রি হচ্ছে বারে, ফোন কলে মিলছে অর্ধেক দামে

পানি মিশিয়ে দেয়া ও মাপে কম দেয়ার পর এবার রাজধানীর বিভিন্ন বারে নকল বিদেশি মদ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এসব নকল মদ বিক্রেতাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মিলছে অর্ধেক দামে।

দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তা বন্ধ হচ্ছেনা। এতে একদিকে ক্রেতারা ঠকছে অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।

এদিকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্পিরিট, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, রঙ, সুগন্ধী, কোকাকোলা জাতীয় পানীয় ও ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তৈরি করা মদ চট্টগ্রামে বিক্রি হচ্ছে বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে। এসব ভেজাল মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি তিন জনের মৃত্যুর পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

তাদের কাছ থেকেই এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, অনুমোদিত বিভিন্ন বার ও ক্লাব থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল সংগ্রহ করে ভেজাল মদ ঢুকিয়ে নতুন লেভেল লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় প্রতি বোতল ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে দেড় হাজার থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। এসব ভেজাল মদ শরীরে বিষক্রিয়া তৈরি করছে।

গত ১৩ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার বিশ্বকলোনির মালিপাড়ায় মদপানে তিন জনের মৃত্যু হয়। এরা হলেন, বিশ্বজিৎ মল্লিক, শাওন মজুমদার জুয়েল ও মিল্টন গোমেজ। আর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন উজ্জ্বল বণিক নামে একজন।

জানা গেছে, রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ভেজাল/নকল মদ বিক্রির একটি চক্র রয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে শর্তসাপেক্ষে চক্রের সদস্যরা বিদেশি মদ কম দামে সরবরাহ করে আসছে। আর স্বল্প মুল্যে পেয়ে ক্রেতারাও আকৃষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, বিভিন্ন বার থেকে খালি বিদেশি মদের বোতল সংগ্রহ করে তারা। পরে ওইসব বোতলে নকল মদ ঢুকিয়ে ছিপি লাগিয়ে (ইনটেক) নতুন বলেই বিক্রি করে তারা। যেকোনো ব্র্যান্ডের মদ চাইলেই তারা সরবরাহ করতে পারেন। বারের তুলনায় অনেক কম দাম নেয়ার কারণ হিসেবে তারা জানান, কম মুল্যে না বিক্রি করলে ক্রেতা পাওয়া যায়না।

নকল মদে বিষক্রিয়া হয় কি না এ প্রসঙ্গে তারা জানা, তাদের ব্যবহৃত পদ্ধতিতে তৈরি মদে অনেকদিন ধরেই মানুষ পান করে আসছে। এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে নকল মদ তৈরি চক্রের সদস্যরাই বিভিন্ন বারে তাদের তৈরি মদ সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কাকরাইল, ইস্কাটন ও তেজগাঁও এলাকার কয়েকটি বারে

নিয়মিত মদ পান করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা নিয়মিত দেশি মদ (কেরু অ্যান্ড কোং এর তৈরি) পান করেন। সাম্প্রতিক সময়ে বন্ধুদের প্ররোচনায় পড়ে বিদেশি মদে আসক্ত হন। ইদানিং কয়েকটি বারে বিদেশি মদ তাদের বেশি পান করতে হচ্ছে। কারণ হিসেবে তারা জানান, সাধারনত চার/পাঁচ পেগ তারা পান করেন। কিন্তু সাত/আট পেগ না পান করলে তারা বুঝতেই পারেননা যে মদ পান করেছেন।
তারা জানান, এ নিয়ে বার কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা বিভিন্ন কথাবার্তায় বিষয়টি এড়িয়ে যান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বেশকিছুদিন ধরেই বারগুলোয় নকল মদ বিক্রি হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে তা। মাদকের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানের কারণে ইয়াবাসেবীরা এখন মদে আসক্ত হচ্ছে। আর এ সুযোগ নিচ্ছে ভেজাল মদ বিক্রেতারা। পাশাপাশি বেশি লাভের আশায় বার কর্তৃপক্ষও এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।