২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৭:৪৬
শিরোনাম:

২৫ বছরের শিকলবন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেলেন রতন

দীর্ঘ ২৫ বছর পর শিকলবন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার রতন মিয়া। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তাকে অন্ধকার কক্ষের বন্দি দশা থেকে মুক্ত করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জীবনের অর্ধেক সময় অন্ধকার ঘরে কাটানোর পর মঙ্গলবার মুক্ত আকাশ দেখার সুযোগ পেলেন রতন।

২৫ বছর আগে মাথায় প্রতিবেশীর লাঠির আঘাতে আহত হওয়ার পর কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাটিয়াদী গ্রামের মৃত আবদুল মোমেনের ছেলে রতন মিয়া। কিন্তু স্বজনরা তাকে চিকিৎসা না করিয়ে শিকলবন্দি করে রাখেন। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে শিকলবন্দি রতন দুর্বিষহ জীবন পাড় করছেন। রতনের জীবনের অর্ধেক সময় কেটে গেছে অন্ধকার কক্ষে শিকলবন্দি হয়ে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জমির মো. হাসিবুস সাত্তার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রুহুল আমিন ও পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন অ্যাম্বুলেন্সসহ সাটিয়াদী গ্রামে রতনদের বাড়ি যান। সেখানে একটি ঘরের বারান্দায় অন্ধকার কক্ষে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য প্রকল্পে ভর্তি করা হয়।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে শিকলবন্দি রতন মিয়ার করুণ অবস্থার কথা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়া হয়।

প্রথমে রতনের চিকিৎসার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রতন মিয়াকে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ নং কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে দুজন গ্রাম পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জমির মো. হাসিবুস সাত্তার বলেন, সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় রতনের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তার শরীরে রক্তশূন্যতা আছে। তিনি অপুষ্টিতে ভুগছেন। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে সুস্থ করে তোলা হবে।

রতনের স্বজনদের দাবি, তাকে ২৫ বছর আগে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল। অন্যের ক্ষতি করতে পারে এমন ভয়ে রতনকে নির্জনে বেঁধে রাখা হয়।