১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:০৩
শিরোনাম:

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারন- দখল ও দূষনের কারনে অস্তিত্ব হারাচ্ছে শিববাড়িয়া নদী

উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দখল ও দূষনের কারনে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে শিববাড়িয়ানদী। মাছ ধরা ট্রলার এসে এই নদীর দু’পাড়ে অবস্থান করে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারন ও মানব সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা এবং প্রকৃতির বিরুপ প্রভাবে এক সময়ের খড়স্ধেসঢ়;্রাতা নদীটি ক্রমশই মরে যেতে বসেছে। নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা কমে গেছে আশঙ্কাজনক ভাবে।

এমনকি মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলিপুরের এই নদীর দু’পাড় পলি পরে ভরাট হয়ে গেছে। এ সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বরফকল, ডক ইয়ার্ডসহ পাকা স্থাপণা তৈরী করে ব্যবসা খুলে বসেছে। এর ফলে নৌযান চলাচলের সম্পূর্ন অনুপোযোগী হয়ে পরবে বলে এমনটাই মনে করেছেন এ নদীর সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। মহিপুর-আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির দেয়া তথ্য মতে, এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের অন্যতম সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ও বিপনন কেন্দ্র। এখানে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দুইশতাধিক মৎস্য আড়ৎ এবং ৪৬ টি বরফ কল রয়েছে। এছাড়াও এ পেশাকে কেন্দ্র করে এখানে শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন মহিপুর-আলীপুর থেকে কয়েকশ টন মাছ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানী
হয়। জেলে, আড়ৎদার, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, মালিক, মহাজন মিলিয়ে এখানে কয়েক হাজার মানুষের রয়েছে কর্মসংস্থান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে বর্তমানে যে ইলিশের চাহিদা রয়েছে তার অনেকটাই পূরণ হয়ে থাকে মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুর থেকে। প্রতি বছর এ খাত থেকে প্রচুর পরিমান রাজস্ব আয় হয়।

যা জাতীয় অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সেই শিববাড়িয়া নদীটি দখল ও দূষনের কারনে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এখন
নাব্যতা সংকটের কারনে জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে সমুদ্রগামী মাছ ধরা ট্রলার গুলো চলতে হয়। এর ফলে সময় মত আহরিত মাছ বিক্রি করতে পারছেনা জেলেরা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এ নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবী
জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়িসহ জেলেরা। একাধিক জেলেদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ নদীটির নাব্যতা কমে গেছে। সমুদ্র থেকে মাছ নিয়ে ঘাটে আসার সময় বিভিন্ন পয়েন্টে আটকা পড়তে হয়। তাই সময় মত মাছ বিক্রি করতে পাড়ছেনা তারা। এর ফলে অনেক সময় লোকসানের বোঝা বইতে হয়। তবে এ নদীটি ড্রেজিং করা প্রয়োজন বলে ওইসব জেলেরা
জানিয়েছেন। জেলে মমিন মাঝি বলেন, সাগরে আবহাওয়ার পূর্ব সর্তক সংকেত কিংবা সাগর উত্তাল হয়ে উঠলেইে এই নদীতে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে থাকি। অথচ নাব্যতা কমে যাওয়াতে প্রায়শই দূর্ঘটনার কবলে পরতে হয়। মহিপুর সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল সালাম আকন জানান, এই নদীটিতে এক সময় নিয়মিত লঞ্চ ও কার্গো চলাচল করতো। এসব এখন শুধুই
স্মৃতি। নদীর নাব্যতা কমে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে ড্রেজিং কাজ শুরু করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান মো.আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, মহিপুর আলীপুর মৎস্য বন্দরের উপর নির্ভর করে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। নাব্যতার অভাবে এ মৎস্য বন্দরটি কার্যকারিতা হারালে তা এলাকার অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব পড়বে। গুরুত্বপূর্ন এই নদীকে বাচাঁতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের এখনই নজর দেওয়া উচিত। পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী(কলাপাড়া সার্কলে)ওয়ালীউজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, এ নদী খননে আপাতত কোন কার্যক্রম নাই।