২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:০৬
শিরোনাম:

এক দেশে দুই নিয়ম, অন্য বন্দরে ১০ ভাগ হলেও মোংলা বন্দরে হচ্ছে শতভাগ পন্য পরিক্ষা

নইন আবু নাঈম, (বাগেরহাট)ঃ দেশের বিভিন্ন বন্দর থেকে আমদানী-রপ্তানী পন্যে মাত্র ১০ ভাগ র‌্যান্ডডাম সিলেকশনের মাধ্যমে কাস্টমস কাইক পরিক্ষণের করলেও মোংলা বন্দরের জন্য রয়েছে ভিন্ন নিয়ম। মোংলা বন্দরে আসা পন্য শতভাগ পরিক্ষা করায় এবন্দও ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের(এনবিআর) ১০ ভাগ পন্য পরিক্ষার নির্দেশনা মানছেনা মোংলা বন্দর কাস্টমস হাউজ। এতে করে মোংলা বন্দর ব্যাবহারে ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় দেশের আমদানী রপ্তানী বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়ার পাশাপাশি বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষ তথা সরকার।

চট্টগ্রাম বন্দর, ঢাকা আইসিডি, পানগাও, বেনাপোল স্থল বন্দরসহ দেশের সকল আন্তর্জাতিক বন্দর থেকে
ব্যবসায়ীরা আমদানী ও রপ্তানী পণ্য আনা নেয়া করে থাকেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক আদেশে
এসব পণ্যের মাত্র ১০ ভাগ র‌্যানডাম সিলিকশনের মাধ্যমে পরিক্ষনের জন্য কাস্টমসকে নির্দেশ দেয়। বছরের পর বছর ধরে এনবিআরের এই নির্দেশনা জারী থাকলেও দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতীক সমুদ্ধসঢ়;্র বন্দর মোংলায় চলছে তার উল্টো নিয়ম। মোংলা কাস্টমস হাউজ এই বন্দর থেকে আমদাণী রপ্তানী পণ্যে ১০ ভাগ পরিক্ষন না করে শতভাগ পরিক্ষনের নিয়ম চালু রেখেছে। বিএনপিÑজামায়াত জোট সরকারের আমলে মৃত্যুপ্রায় এই বন্দরকে সচল
করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেয়ার এগারো বছর পর এখনোও মোংলা বন্দরে শতভাগ পণ্য পরিক্ষনের নিয়ম অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও এনবিআরের আদেশ মানছে না মোংলা কাস্টমস হাউজ।

এই অবস্থায় দেশের বড়-বড় আমদানী রপ্তানীকারকরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফলে
সক্ষমতা থাকার পরেও দেশের আমদানী রপ্তানী বানিজ্যে অন্যন্য বন্দরের তুলনায় অনেকাংশে পিছিয়ে পড়ছে
মোংলা বন্দর। মোংলা বন্দর ব্যহারকারী ও বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রি’র সভাপতি শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন মুঠোফোনে এই প্রতিবেদকে বলেন মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কাজে লাগাতে দ্রুত তরিৎ খালাস পদ্ধতি ও ১০ ভাগ পন্য পরিক্ষনের এনবিআরের আদেশ ৪৭ ও ৪৮ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আমদানী-রপ্তানী বানিজ্যে এক দেশে দুই নিয়ম থাকতে পারেনা। এছাড়া এই বন্দরে এলসিএল কার্গো আনার জন্য মোংলা বন্দর ও কাস্টমস কতৃপক্ষকে বার বার অনুরোধ করার পরও কোন পক্ষ থেকে সাড়া না মেলায় ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে চট্রগ্রাম বন্দরে এলসিএল পন্য আমদানী করছে। আর একারনে এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের উপর থেকে চাপ কমানোসহ আমদানী-রপ্তানী বানিজ্যে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কাজে
লাগেতে দ্রুত এই বন্দরের সকল পন্য এনবিআরের নির্দেশনা মতে ১০ ভাগ র‌্যান্ডডাম সিলেকশনের মাধ্যমে
পরিক্ষণের ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই বন্দর যখন লাভজনক বন্দরে পরিনত
হচ্ছে, তখন প্রশাসনে বিএনপিÑজামায়াত আর্দশের কর্মকর্তারা এ বন্দর ঘিরে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এই
ষড়যন্ত্র এখনই বন্দ করা না গেলে মোংলা বন্দর আবারো হুমকির মুখে পড়তে পারে আশংকা এই ব্যাবসায়ী
নেতার।

এই বিষয়ে মোংলা বন্দর কাস্টমস কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ^াস বলেন, মোংলা বনদরে আমদানী-রপ্তানী পন্য ১০
ভাগ পরিক্ষনের বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে হলে এখন এনবিআরকে নতুন করে নির্দেশরা দিতে হবে। কারন আগে
থেকেই মোংলা বন্দরে শতভাগ পন্য পরিক্ষণ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। কাস্টমসের একার পক্ষে এই বন্দরে শতভাগ থেকে ১০ ভাগ পন্য পরিক্ষণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। এনবিআরই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।