২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:৪৬
শিরোনাম:

তৃণমূলের চেয়ে শীর্ষ পর্যায়েই দুর্নীতিবাজ বেশি বলে অভিযোগ কর্মীদে

তৃণমূল পর্যায়ে দলের বহিরাগত ও দুর্নীতিবাজদের তালিকা করেছে আওয়ামী লীগ। আগামী কমিটিতে রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন নেতারা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে এখন দুর্নীতিবাজ ও অনুপ্রবেশকারীদের বিদায় করার প্রক্রিয়া চলছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে যেসব নতুন কমিটি হবে সেখানে তাদের জায়গা হবে না বলে শোনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার এই মনোভাবে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

সম্প্রতি যুবলীগের চেয়ারম্যানওমর ফারুক চৌধুরীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ক্যাসিনো কাণ্ডে কারণে। একই কারণে বিদায় করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসারকে। সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে কাউন্সিলের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তারও আগে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিদায় করা হয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীকে। এখন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের সংস্কার চান। তাদের অভিযোগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনে অনেক বহিরাগত রয়েছে।

দেশের দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমাদের কাছে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। আমরা তা পঠিয়ে দিয়েছি। আর দুর্নীতিবাজ কারা তা সবাই জানে। তাদের তালিকা করছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমরা এবার এদের কাউকেই আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের কোনো কমিটিতে ঠাঁই দেবো না।

তিনি জানান, ‘আমাদের এখানে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কমিটিতে বহিরাগত বেশি। এমনকি শিবিরের ছেলেরাও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃত্বে চলে এসেছে। আওয়ামী লীগেও বিএনপির লোকজন ঢুকছে। উপজেলা কমিটির সহসভাপতি পদেও আছেন বহিরাগতরা।

এটা কীভাবে সম্ভব হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং-এর কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। যার যার গ্রুপকে শক্তিশালী করার জন্য বহিরাগত জামায়ত-শিবির ও বিএনপিকে আওয়ামী লীগে আনা হয়েছে। আবার অভিযোগ আছে টাকার বিনিময়েও তাদের কাছে পদ বিক্রি করা হয়েছে।

একই ধরনের কথা বলেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা যেন সফল হয় এটা আমাদের প্রত্যাশা। তাকে যদি সবাই সহযোগিতা করেন তাহলে তিনি সফল হবেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পাশেও মোশতাকরা আছে। তার পাশেও মীরজাফররা আছে। তিনি যদি তাদের চিনে দূরে সরিয়ে দিতে পারেন, শাস্তি দিতে পারেন, তাহলে তিনি দুর্নীতিবাজ ও হাইব্রিডদের বিরুদ্ধে সফল হবেন।

তৃণমূলের এই নেতা বলেন, ‘আমরা দেখেছি তৃণমূলের চেয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ে হাইব্রিড, বহিরাগত ও দুর্নীতিবাজ বেশি। আমার বিবেচনায় নেতৃত্বের পর্যায়ে এটা শতকরা ১০ ভাগের কম হবে না। আর তৃণমূলে কমপক্ষে পাঁচ ভাগ।

কিন্তু তার প্রশ্ন, ‘এদের বিদায় করবে কারা? কারণ এদের যারা দলে এনেছেন, দলে ঢুকিয়েছেন তারা আওয়ামী লীগেরই প্রভাবশালী নেতা। এখন তারাই যদি সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তারাতো টিকে যাবেন।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমাদের জেলায় কাউন্সিল ১৯ নভেম্বর। মহানগর ও উপজেলার কমিটি তার আগেই হবে। আমরা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশমতো বহিরাগত ও দুর্নীতিবাজমুক্ত কমিটি গঠন করবো। জামায়াত ও বিএনপির কাউকে কমিটিতে রাখা হবে না।

তিনি জানান, ‘মহানগর ও থানা কমিটিতে জামায়াত ও বিএনপির লোক ঢুকেছে। বিশেষ করে মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ে বহিরাগত বেশি। আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি। কমিটিতে তারা জায়গা পাবেন না।

আর দুর্নীতিবাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের চিহ্নিত করা কঠিন। তাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখছে। আমরাও মনিটর করছি। কেন্দ্র থেকে তাদের একটা তালিকা পাবো।