২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৫২
শিরোনাম:

সুন্দরবনে ৫ মাসব্যাপী শুঁটকী আহরণ মৌসুম শুরু আজ

নইন আবু নাঈম, শরনখোলা (বাগেরহাট)ঃ আজ শুরু হচ্ছে সুন্দরবনের শুঁটকী আহরণ মৌসুম। ১ নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ৫ মাস ধরে চলা এই শুঁটকী আহরণ মৌসুমকে সামনে রেখে বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দুবলাসহ প্রধান ৫টি চরের অস্থায়ী শুঁটকী পল্লীতে আজ থেকে যেতে শুরু করেছে হাজার-হাজার জেলে। চার দশক পর সুন্দরবন দস্যু মুক্ত প্রথম বর্ষ পুর্তির দিনেই একই সাথে শুঁটকী আহরণ মৌসুম ও ইলিশ আহরণ শুরু হওযায় লক্ষমাত্রার অধিক মাছ আহরণের প্রত্যাশা নিয়ে কোন শংঙ্কা ছাড়াই সুন্দরবন যাচ্ছেন জেলেরা। বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলায় জাল ও ফিশিং ট্রলার নিয়ে জড়ো হওয়া হাজার- হাজার জেলে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতির আশংকা মাথায় নিয়েই জেলেরা জাল-নৌকা ও শুটকি তৈরির উপকরণাদি নিয়ে আজ (১ নভেম্বর) সকালের প্রথম ভাটায় দল বেধে সুন্দরবনের দুবলা শুঁটকী পল্লীর উদ্যেশে নদী ও সমুদ্র পথে রওনা হচ্ছেন।

বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলা উপজেলা থেকে ৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরে বঙ্গোপসাগর উপকূলে ৫টি চর নিয়ে সুন্দরবনের সর্ববৃহৎ মৎস্য কেন্দ্র দুবলা শুঁটকী পল্লীর অবস্থান। প্রতি বছর ১ নভেম্বর থেকে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলারচর, আলোরকোল, নারকেল বাড়ীয়া, শেলারচর ও মেহেরআলীর চর নিয়ে সুন্দরবনের অস্থায়ী শুঁটকী পল্লী গড়ে ওঠে। প্রায় ১০ হাজার জেলে ও বহরদারা বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে অস্থায়ী শুঁটকী পল্লীতে অস্থায়ী ঘর করে সামুদ্রিক সাদা মাছসহ চিংড়ী ও কাঁকড়া আহরণ করে থাকে। সুন্দরবনের শুঁটকী পল্লীর জেলেরা কম-বেশী ৩০ প্রকার জাল ব্যবহার করে আহরিত
সামুদ্রিক সাদা মাছ ও চিংড়ি রোদে শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানীর জন্য উপযোগী করে প্যাকেটজাত
করা হয়।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, গত বছরের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফান্সের মাধ্যমে সুন্দরবনকে বনদস্যু মুক্ত ঘোষনা করেন। চার দশক পর সুন্দরবন দস্যু মুক্ত হবার পর গত বছর থেকে শুঁটকী আহরণ বাড়ছে। ১ নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলা শুঁটকী মৌসুমে জেলেরা প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন সামুদ্রিক সাদা মাছ, ৪ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি ও বিশ^খ্যাত রপ্তানী পন্য ‘শিলা কাঁকড়া’ আহরন করে থাকে। এসব শুঁটকী মাছ থেকে চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্র ৩ কোটিও অধিক
রাজস্ব আয় করবেন বলে আশা করছে সুন্দরবন বিভাগ এই কর্মকর্তা। এজন্য বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলেদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পের পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জেলেদের জন্য এবার দুবলার চরে অস্থায়ী সহ¯্রাধিক জেলে ঘর ও জেলে-মহাজনদের জন্য অর্ধশত ডিপো ঘর স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ নির্ধারণ করে ঘরের মাপও ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে বৃহৎ আকারের ঘর তৈরি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।