২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৩:৫৯
শিরোনাম:

স্বাভাবিক প্রসবে দেশের সেরা স্বাস্থ্যকর্মী জুলিয়া নাসরিন

উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :  পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বাভাবিক প্রসবে দেশের সেরা সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক জুলিয়া নাসরিন। বছরের পর বছর গ্রামীন জনপদের গর্ভবতী মায়েদের দিয়ে যাচ্ছেন মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্য সেবাসহ নিরপাদ প্রসবসেবা। তারই হাতের স্পর্শে যেন নিরাপত্তা খুজে পায় গর্ভবতী মায়েরা। তার এমন নিবিড় সেবায় জন্য অজপাড়া গাঁয়ের মায়েদের কাছে পরিচিত পেয়েছেন নিরাপদ প্রসব সেবার বাতিঘর
হিসাবে। এ বছরও প্রসবসেবা প্রদানকারী হিসাবে পেয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার।

শুধু তাই নয় তার কর্মস্থল উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের আমতলীপাড়া ক্লিনিকটিকেও এনে দিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান। তার এমন ধারাবাহিক সাফল্যে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি এখন দেশ সেরা। রোল মডেল হিসাবে পরিচিত পেয়েছে। প্রসূতি সেবায় বাংলাদেশে প্রথমস্থান অধিকারী এ নারীর হাতে সোমবার (৪ নভেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্রান্ড বল রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্র জানায়, পটুয়াখালী নার্সিং ইনষ্টিটিউট ও গোপলগঞ্জ নার্সিং ইনষ্টিটিউট থেকে কমিউনিটি স্কিল বার্থ অ্যাটেনডেন্ট (সিএসবিএ) কোর্স সম্পন্ন করেছেন জুলিয়া নাসরিন। ২০১৩ সালে ৬ জানুয়ারি তিনি উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের অজপাড়াগাঁয়ের আমতলী পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে যোগদান করেন। ৬ বছরে এ কমিউনিটি ক্লিনিকে ১ হাজার ৪৭৪ জন অন্তসত্ত্বা মায়ের নিরাপাদ প্রসব হয়েছে। এরমধ্যে ২০১৮ সালে ৩৯১ জন এবং চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে জুলাই পর্যন্ত ২৩২ জন গর্ভবতী মা
স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, জুলিয়া নাসরিনের যোগদানের পরই পাল্টে যেতে থাকে আমতলীপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের চিত্র। সন্তান সম্ভবা মায়েরা এ ক্লিনিকে স্বাস্থসেবার জন্য ছুটে যায়। তিনি তাদের সবাইকে পারমর্শ দেয়। সন্তন
প্রসবকালীন তার হাতে এখন পর্যন্ত কোন গর্ভবতী মা মারা যায়নি। এমকি মৃত নবজাতকও প্রসব হয়নি। সহকারি স্বস্থ্য পরিদর্শক (সিএসবিএ) জুলিয়া নাসরিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য দিয়ে আসছি। সন্তান প্রসবের মত জটিল কাজ করতে গিয়ে বাস্তব কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। সন্তান প্রসবের কাজ শেষ হতে অনেক সময় রাত হয়ে গেলে ক্লিনিকের বেঞ্চিতেই ঘুমিয়ে পরতাম। এতে একটুও কষ্ট অনুভব হয়নি। বরং একজন মা সন্তান প্রসবের পর সুস্থ থাকলেই আনন্দ পাই।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, আমতলীপাড়া কমিনিউটি ক্লিনিকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স থেকে অনেক দূরে। ফলে ওই এলাকার মানুষ এই ক্লিনিকটি ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। দক্ষ অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মী জুলিয়া নাসরিন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই এলাকার গর্ভবতী মায়েদের প্রসবকালীন
স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে অনুকরনী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের ভাবমূর্তিকে উজ্বল করেছেন।