১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৫২
শিরোনাম:

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের পরিচালকের ‘বিচার’ চান ফখরুল

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে হাসপাতালটির পরিচালক মিথ্যা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর জন্য হাসপাতালের পরিচালকের বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে ফখরুল বিচার দাবি করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পঙ্গু হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি এখন এতটাই অসুস্থ যে তিনি নিজে হাতে ধরে কিছু খেতেও পারেন না। তাঁকে সাহায্য করে খাইয়ে দিতে হয়। তিনি হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারেন না। এমনকি বিছানা থেকেও দু’জন সাহায্য করে তাঁকে উপরে তুলতে হয়।’

বিএনপি প্রধানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের পরিচালকের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের মদদপুষ্ট হাসপাতালের ডাইরেক্টর বলেন, ‘তিনি (বেগম জিয়া) আগের চাইতেও সুস্থ। দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য সম্বন্ধে এই যে মিথ্যা ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে এর জন্য ওই ডাইরেক্টরের বিচার হওয়া উচিত।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে যে রিপোর্ট তারা দিয়েছেন তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। আমরা এখান থেকে স্পষ্টভাবে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের সঠিক তথ্য প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।’

ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন সম্পূর্ণ ম্যান্ডেটবিহীন একটা সরকার। এই সরকারকে ক্ষমতায় রাখার মানে হচ্ছে জনগণের সর্বনাশ করা। আজকে প্রত্যেকটি পণ্যের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আজকে মানুষ চাল কিনে খেতে পারছে না। অথচ গ্রামে যান, কৃষকরা বলবে- ‘আমরা ধানের দাম পাচ্ছি না, ধান ৩০০ টাকা ৪০০ টাকা মণ। অথচ চালের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।’

ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের পতন ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে জনগণের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি। তাই আজকে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা বারবার বলেছি, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। সমস্ত দেশপ্রেমিক শক্তিকে একত্রিত করে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে।’

মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গেও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঢাকঢোল পিটিয়ে ভারত সফরে গেলেন। আমরা আশা করেছিলাম সেখানে আমাদের তিস্তা নিয়ে চুক্তিগুলো সম্পন্ন হবে এবং আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যা পাব। কিন্তু তিস্তা নদীর এক ফোঁটা পানি চুক্তি হয়নি, অথচ আমার ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেয়ার জন্য চুক্তি করে আসা হয়েছে। আজকে গ্যাস আমদানি করে আগরতলাতে পাঠানো হচ্ছে অর্থাৎ আমদানি করে রপ্তানি করা হচ্ছে। জনগণ এতো বোকা নয় যে, এসব বুঝতে পারে না।’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে বঙ্গোপসাগরে রাডার লাগানো হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ভারত সেরা দলগুলো বসাবে এবং তারা পর্যবেক্ষণ করবে। আমরা স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছি এবং আবারো চাই। তাদেরকে এই চুক্তিগুলোর পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। আমার দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা হচ্ছে কিনা আমরা এ বিষয়ে সরকারের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই।’

ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় রেল দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। ব্যর্থ সরকার কোনও কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এর আগেও আমরা বহুবার দেখেছি রেললাইনে দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সাধারণ সম্পাদক এম আবদুল্লাহ, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।