২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৩২
শিরোনাম:

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ধস, বিদ্যুৎ- মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন

নইন আবু নাঈম, শরনখোলা (বাগেরহাট)ঃ ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বাগেরহাটের শরণখোলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় তার ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, গাছপালা আর ফসলের মাঠে। রবিবার সকাল সাতটার দিকে এখানে আঘাত হানে বুলবুল। প্রবল বৃষ্টি আর ঝড়ের তান্ডব চলে প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে। রাস্তাঘাটে গাছ পড়ে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল। বিদ্যুতের খূঁটি উপড়ে ও তার ছিড়ে গেছে। এর ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক।

এছাড়া, বুলবুলের প্রভাবে বলেশ্বর নদের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ফসলের মাঠ ও বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ে। জলোচ্ছাসে কয়েক শ পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। উপজেলার ভাঙনকবলিত সাউথখালী ইউয়িনের বগী থেকে দক্ষিণ সাউথখালী আশার আলো মসজিদ পর্যন্ত পাউবোর প্রায় দুই কিলোমিটার রিংবাঁধ বলেশ্বরের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ধসে গেছে। যে কোনো মুহূর্তে ওই বাঁধ ভেঙে ফসল ও জানমালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এদিকে, ঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ায় দুপুরের পর থেকে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধিরা আশ্রয় কেন্দ্রেই অবস্থান করছে। দুপুরে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ইউনিয়ন
পরিষদের মাধ্যমে খিচুড়ি সরবরাহ করা হয়েছে।

খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর জব্বার জানান, ঝড়ের গাছ পড়ে তার বসতঘরসহ তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। রেইনট্ধিসঢ়;্র, চাম্বল, সুপারি ও অন্যান্যসহ ১০-১৫টি গাছ পড়ে গেছে। এতে সব মিলিয়ে তার প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এভাবে উপজেলার সবখানেই গাছপালা, ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাউথখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন , রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন এবং ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম টিপু জানান, তাদের চারটি ইউনিয়নে ঝড়ে দুই হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বেশিরভাগ ঘর গাছ উপড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া, কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির ছোটবড় গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। সহ¯্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার ও জ্যষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় জানান, কৃষি ও মৎস্য সেক্টরের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে কাজ চলছে। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, ঝড়ে উপজেলার সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে প্রসাশনের গঠিত টিম মাঠে নেমেছে। পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় ক্ষতি বহু অংশে কম হয়েছে। বগীর ঝুঁকিপূর্ণ
বেড়িবাঁধ, ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে আশ্রিতদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।