২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:১৬
শিরোনাম:

লবণের ঘাটতি নেই গুজবে লবণ কেনার হিড়িক, মাঠে পুলিশ

রাজধানীতে হঠাৎ করেই মঙ্গলবার লবণ কেনার হিড়িক পড়ে। ক্রেতারা জানান, তারা শুনেছেন লবণের কেজিপ্রতি দর ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এ আশঙ্কায় তারা বাড়তি লবণ কিনে রাখছেন। গতকাল বেলা তিনটায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের দোকানগুলোয় লবণ কিনতে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যায়। কেউ দুই কেজি, কেউ পাঁচ কেজি লবণ কিনছিলেন। এমনকি বন্ধ দোকান খুলেও অনেক বিক্রেতা লবণ বিক্রি করেন। কারওয়ান বাজারে মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। অবশ্য বিক্রেতারা সেখানে প্যাকেটের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) অনুযায়ী ৩৫ টাকা দরে লবণ বিক্রি করছিলেন। সকালে রাজধানীর কাজীপাড়া, আগারগাঁও, তেজগাঁও ও বেগুনবাড়ি এলাকার বাজার ও মুদি দোকানেও লবণ কিনতে ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। কাজীপাড়ার খালেক জেনারেল স্টোরের মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাঁচ বস্তা (প্রতি বস্তায় ২৫ কেজি করে) লবণ বিক্রি করেছেন। তার দোকানে দাঁড়িয়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি প্রতি কেজি লবণ সাড়ে ২৬ টাকায় কিনেছেন।

তিনি সব সময় এমআরপির চেয়ে কম দামে বিক্রি করেন। উত্তরার ১২ ও ১৩ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বেশ কিছু দোকানে বিক্রেতারা বলেছেন লবণ নেই। সব বিক্রি হয়ে গেছে। একটি দোকানে লবণ পেলেও দাম চাওয়া হয়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা। বেগুনবাড়ি কুমিলস্না জেনারেল স্টোর অ্যান্ড কনফেকশনারিতে ৪০ টাকা কেজিতে লবণ বিক্রি করতে দেখা যায়, যা এমআরপির চেয়ে ৫ টাকা বেশি। বাজারে এখন সবচেয়ে ভালো মানের লবণের প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা ৩৫ টাকা। আর সাধারণ লবণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিপণনকারী কোম্পানি এক কেজি লবণ বিক্রি করেন ২৫ থেকে ২৬ টাকা দরে। এত দিন কারওয়ান বাজারের মতো বড় দোকানে এসব লবণ ৩০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেত। গতকাল সকালে ক্রেতাদের বাড়তি চাপ দেখায় খুচরা বিক্রেতারা তখন আর ছাড় দিয়ে বিক্রি করেননি। আবার দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চড়া দামে লবণ বিক্রির খবর এসেছে। কারওয়ান বাজার থেকে লবণ কিনে ফিরছিলেন জয়নাল আবেদিন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৩০ টাকার পেঁয়াজ ২৫০ টাকা হয়ে গিয়েছিল। এখন যদি লবণেও তেমন হয়। তাই কিনে রাখছি।’ লবণের বাজারের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এসিআই সল্ট জানায়, লবণের কোনো ঘাটতি নেই। তারা লবণের দাম কোনোভাবেই বাড়ায়নি এবং বাড়াবে না। বরং নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি কেউ এসিআইয়ের লবণ বিক্রি করছে কি না, সেটা তারা নজরে রাখবে। ঘাটতি নেই, বলছে মন্ত্রণালয় এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ও এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ভোজ্যলবণ মজুত রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের লবণচাষিদের কাছে ৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন লবণ মিলের গুদামে ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুত রয়েছে। এছাড়া সারাদেশে বিভিন্ন লবণ কোম্পানির ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ মজুত রয়েছে। পাশাপাশি চলতি নভেম্বর মাস থেকে লবণের উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলায় উৎপাদিত নতুন লবণও বাজারে আসতে শুরু করেছে। দেশে প্রতি মাসে ভোজ্য লবণের চাহিদা কমবেশি ১ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে, লবণের মজুত আছে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন। সে হিসাবে লবণের কোনো ধরনের ঘাটতি বা সংকট হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল লবণের সংকট রয়েছে মর্মে গুজব রটনা করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় লবণের দাম অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। লবণসংক্রান্ত বিষয়ে তদারকির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রধান কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এর নম্বর হচ্ছে: ০২-৯৫৭৩৫০৫ (ল্যান্ড ফোন), ০১৭১৫২২৩৯৪৯ (সেল ফোন)। লবণসংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়। পুলিশকে মাঠে নামার নির্দেশ এদিকে দেশে লবণের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে তাই পুলিশ সদস্যদের দোকানে দোকানে গিয়ে তলস্নাশি চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) মনিরুল ইসলাম ওয়ারলেসে পুলিশ সদস্যদের এই নির্দেশ দেন। ডিএমপির একাধিক ওসি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নির্দেশনা পেয়ে থানা এলাকার পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে লবণের মজুতের খোঁজখবর নেন। মুগদা এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা জানান, বিকেলে দোকানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশি দামে লবণ বিক্রি করায় কয়েকজনকে আটক করে। এ বিষয়ে মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বলেন, লবণ নিয়ে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া কেউ অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি করছে কি না- সে বিষয়ে নজর রাখছেন। সূত্র জানায়, ধানমন্ডি ও হাজারীবাগে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করলেও বিষয়টি স্বীকার করেনি পুলিশ। ধানমন্ডি থানা পুলিশ জানায়, ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ পেয়ে ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকার সুপারশপ এবং দোকানগুলোতে লবণের খোঁজে পুলিশ যায়। গিয়ে দেখে অনেক দোকানে লবণ শেষ। কী কারণে তাদের লবণ নেই, চালানের সঙ্গে মজুতের পরিমাণ দেখা হয়। তবে বেশিরভাগ দোকানে গিয়ে লবণ পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার নয়াবাজারে অভিযান চালায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুলস্নাহ আল মামুন। অভিযানের শুরুতে তিনি বাজারের পাইকারি দোকানগুলোতে লবণের মজুত নজরদারি করেন। ব্যবসায়ীদের কাছে লবণের দাম বৃদ্ধি ও সংকটের কারণ জানতে চান। ঢাকার বাইরের অবস্থা আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো এ সংক্রান্ত খবর: টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে ‘লবণের দাম বেড়ে প্রতিকেজি ১০০-১২০ টাকা হচ্ছে’ এমন গুজবে শহরের পার্কবাজার, ছয়আনী বাজার, সাবালিয়া বাজার, বটতলা বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা লবণ কিনেছেন। তবে বাজারগুলোতে লবণের দাম বেশি নেওয়া হয়নি। প্রায় দোকানেই বাজারমূল্যেই লবণ বিক্রি হয়। লবণের দাম বাড়ার তথ্যটি গুজব বলে দাবি করেছেন টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকুনুজ্জামান।

পরে লবণের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মঙ্গলবার দুপুরে শহরের পার্ক বাজার ও ছয়আনী বাজারে লবণ বিক্রেতাদের দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী ও আগের দামেই লবণ বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন বাজার মনিটরিং শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের একথা বলেন। জেলা প্রশাসক বলেন, বাজারে লবণের কোনো সংকট নেই। মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চারটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির ১৮ টন লবণ মজুদ ছিল। এর মধ্যে এসিআই লবণ ৪ টন, মোলস্না সল্ট ৫ টন, ফ্রেস দেড় টন এবং কনফিডেন্স লবণ সাড়ে ৭ টন। এছাড়া ১০৭ টন লবণ দুই-এক দিনের মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌছবে। গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী, সাতপাড়, গোপালগঞ্জ বাজার ও কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর বাজারে লবণ কেনার হিড়িক পড়ে। এসব বাজারের প্রায় অর্ধ শতাধিক পাইকারি ও খুচরা দোকানে লাইন দিয়ে লবণ ক্রয় করতে দেখা যায়। গুজব ঠেকাতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিংয়ে নামতে হয়। সদর ও কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, এ মুহূর্তে লবণের কোনো সংকট নেই। তাই দাম বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই। যদি কোনো ডিলার বা ব্যবসায়ী বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে লবণ বিক্রি করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে দাম বৃদ্ধি নিয়ে গুজবের মাধ্যমে বাজারে লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। একদিন পর অতিরিক্ত মূল্যে লবণ কিনতে হবে, এমন গুজবের পর দোকানে লাইন পড়ে ক্রেতাদের। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বিক্রি হয় লাখ লাখ টাকার লবণ। অসাধু ওই ব্যবসায়ীদের ধরতে অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। বাজারে লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টায় দুই মজুদদারকে ১০ দিনের কারাদন্ড ও অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির দায়ে আরো দুইজনকে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান জানান, শহরের চৌধুরী বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন। বোদা (পঞ্চগড়): পঞ্চগড়ের বোদায় ভুয়া গুজবে লবণের দাম বৃদ্ধির খবর ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে লবণ কিনতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির মতো ভুয়া গুজবে লবণের দাম বৃদ্ধির কথা শুনে মঙ্গলবার সকাল থেকে বোদা বাজারের মুদির দোকানগুলোতে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা লবণ কিনেছেন। প্রথমে কোনো কোনো দোকানদার বেশি দামে লবণ বিক্রি করলেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অনেকে নির্ধারিত দামে লবণ কেনেন। উপজেলার কিছু ইউনিয়নের বাজারগুলোতে ১৫ টাকা কেজির লবণ ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। হরিপুর (ঠাকুরগাঁও): মঙ্গলবার সকাল থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে লবণের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। বাজারগুলোতে চলে লবণ কেনার প্রতিযোগিতা। কেউ দুই কেজি, কেউ তিন কেজি, কেউ পাঁচ কেজি, কেউবা ১০ থেকে ১৫ কেজি লবণ কিনে বাড়িতে নিয়ে যান। অনেকে মাঠের কাজকর্ম ফেলে বাজারে আসছে লবণ ক্রয় করতে। লবণের মূল্য বৃদ্ধির গুজবে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লবণ বিক্রির দোকানগুলোতে জনসাধারণের ছিল উপচে পড়া ভিড়। মাদারগঞ্জ (জামালপুর): জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে লবণ ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে মোবাইল ফেসবুকে তারা দেখেছেন প্রতি কেজি লবণ ২ শত টাকা দাম হবে। সে কারণে তারা বেশি দামে লবণ বেশি করে ক্রয় করছেন। প্রতিজন ক্রেতা ৫ থেকে ১০ কেজি করে লবণ কিনে নেন। লবণের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, এটা গুজব ছড়ানো হয়েছে। বাজারে লবণের কোনো সংকট নেই। মদন (নেত্রকোনা): নেত্রকোনার মদন উপজেলার বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজারে মঙ্গলবার ভোরে লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসন পৌর সদরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২ ব্যবসায়ীকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওয়ালীউল হাসান।

ওসি মো. রমিজুল হককে সাথে নিয়ে বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজারে গিয়ে অধিক মূল্যে লবণ বিক্রি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন ইউএনও। পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও): ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বিভিন্ন দোকানে লবণ কেনার হিড়িক পড়ে। কেউ তিন কেজি, কেউ পাঁচ কেজি আবার কেউ কেউ পুরো মাসের লবণ কিনে বাড়ি নিয়ে যান। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ ২০ টাকার লবণ ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে তাদের। মঙ্গলবার সকাল থেকে এ অবস্থা চলে। এদিকে প্রসাশনের পক্ষ থেকে দুপুরের পরে মাইকে প্রচার করে জানানো হয় লবণসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। কেউ গুজব ছড়ালে বা দাম বেশি নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ): গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়লে লবণ কেনার হিড়িক পড়ে যায় হাটবাজারে। মঙ্গলবার সকাল থেকে মানুষ লবণ কেনার জন্য হাটবাজারে দোকানে গিয়ে ভিড় করেন। এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বেশি দামে লবণ বিক্রি করেন। স্থানীয়রা জানান, লবণের কেজি ২শ টাকা হবে’ কাশিয়ানী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এমন গুজব হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে ৩০ টাকা কেজির লবণ ৮০ টাকায় উঠে যায়। বকশীগঞ্জ (জামালপুর): জামালপুরের বকশীগঞ্জে লবণ নিয়ে গুজবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। লবণের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে এবং লবণের মজুত শেষ হয়ে গেছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লবণ কেনার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েন।

অনেক ব্যবসায়ী এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লবণের মূল্য বৃদ্ধি করে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ৩৫ টাকার লবণ কতিপয় ব্যবসায়ী ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ): ভোলাহাটে লবণের দাম আধা ঘণ্টার মধ্যে দিগুণ বৃদ্ধি পায়। মঙ্গলবার ভোলাহাট উপজেলায় মুন্সিগঞ্জহাট ও পোলস্নাডাঙ্গা হাটখোলায় হাটবার। হাটে ক্রেতারা লবণ ক্রয় করতে গেলে প্রথমে দিকে লবণের কেজিতে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও আধা ঘণ্টার মধ্যে হঠাৎ লাফিয়ে কেজিতে ৩০ দরে বিক্রয় শুরু হয়। এ সময় ক্রেতা বিক্রেদের মধ্যে শুরু হয় বাকবিতন্ডা। এদিকে হাটবাজার ছাড়াও বিভিন্ন দোকানেও বৃদ্ধি করেছে লবণের দাম। ধামইরহাট (নওগাঁ) : নওগাঁর ধামইরহাটে হঠাৎ গুজব ওঠায় লবণের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর থেকে উপজেলার সর্বত্র লবণ সংকট এবং দাম বৃদ্ধি পাবে এই মর্মে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তথ্যটি সঠিক কিনা তা না জেনে মানুষ মুঠোফোনসহ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জনের কাছে বার্তা পাঠায়। দুপুর ২টার পর থেকে মানুষ দল বেঁধে পাইকারি ও খুচরা লবণের দোকানে ভিড় জমান।