২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৩:৫৪
শিরোনাম:

কুষ্টিয়ায় মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার দৃশ্য ভাইরাল (ভিডিও)

কুষ্টিয়ার মিরপুরে ‘সমর্পণ’ মাদকাসক্তি মানসিক চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ওই কলেজ ছাত্রের নাম ইমন আলী।

২০ নভেম্বর ওই কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমনকে মিরপুর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মঙ্গলবার সকালে সিসি টিভি’র ফুটেজ কলেজ ছাত্র হত্যার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এনিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। তবে মাদকসক্তি নিরাময় কেন্দ্রর কর্মকর্তাদের দাবি ওই কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়ায়। এমন দাবি করা হলেও সিসি টিভি’র ফুটেজ দেখা গেছে ওই ছাত্রকে পিটিয়ে ও ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হচ্ছে।

গত ১৯ নভেম্বর দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাদেরপুল গ্রামের এজাজুল আজিমের ছেলে কলেজ ছাত্র ইমন আলীকে ভর্তি করা হয় মিরপুর বিজিবি সেক্টর এলাকার সমর্পণ মাদকাসক্তি, মানসিক চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

মানসিক সমস্যাজনিত কারণে ভর্তি শেষে পরিবারের সদস্যরা ফিরে যান বাড়িতে। পরদিন ২০নভেম্বর সকালে ইমনের পরিবারকে জানানো হয় ইমনকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে ইমনের বাবা মা আত্মীয় স্বজন গিয়ে দেখতে পান তাদের ইমন আর বেঁচে নেই। ইমনের এমন অকাল মৃত্যু পরিবারের সদস্যরা মেনে নিতে না পারলেও মৃত্যু বিধাতার লিখন তাই কাউকে দায়ি না করে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয় মরদেহ।
তবে ইমনের মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয়, তাকে নির্যাতন করেই মেরে ফেলা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে। ক্যামেরায় পরিস্কার দেখা যাচ্ছে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বেশ কয়েকজন ইমনকে হাত পা বেঁধে মারধর করছে, শরীরের পুশ করা হচ্ছে ইনজেকশনও।
ইমনের মা কামরুন্নাহারের অভিযোগ, ইমনকে সুস্থ্য অবস্থায় ওখানে রেখে আসা হয়েছিলো। পরে তাকে নির্যাতন করেই হত্যা করা হয়।

ইমনের বাবা এজাজুল আজিম বলেন, ইমনের এমন নির্মম মৃত্যুর জন্য দায়ি ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

যে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ইমনকে মেরে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সেখানে গিয়ে মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া না গেলেও ঘটনার সময় ওই নির্যাতনের সাথে জড়িত রুবেল নামে ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। তিনি জানান উশৃঙ্খলতা ঠেকাতে হাত বেঁধে চড় থাপ্পড় মারা হয় ইমনকে। সমর্পণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক হাবিব উদ্দিন জানান নির্যাতনে নয়, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়ায় মারা যায় ইমন। এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হোননি মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম।

মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন ফারাজি বলেন, ইমনের শরীরের আঘাতের চিহ্ন ছিলে কিন্তু কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ময়না তদন্ত ছাড়া বলা যাবেনা।