২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৪:৩৪
শিরোনাম:

সাংসদের গাড়িতে পেট্রল না দেওয়ায় সেই পাম্প বন্ধ!

পেট্রলপাম্পগুলোয় ধর্মঘট চলাকালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেনের গাড়িতে পেট্রল না দেওয়ার জেরে আজ সোমবার শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছেন সাংসদপন্থী মোটরশ্রমিকেরা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সফর শেষে গতকাল বিকেলে ঢাকা যাওয়ার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পথে রওনা দেন রমেশ চন্দ্র সেন। পথে তাকে বহনকারী দুটি গাড়ি শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে পেট্রল নেওয়ার জন্য যায়। কিন্তু ফিলিং স্টেশনের কর্মীরা ধর্মঘটের কথা বলে গাড়ি দুটিতে পেট্রল দিতে অস্বীকৃতি জানান। সে সময় একটি গাড়িতে সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বসে ছিলেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আরেকটি ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রল নিয়ে সৈয়দপুরের দিকে রওনা দেন। এ ঘটনায় আজ বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে পরিবহনশ্রমিকেরা চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের সামনে এলোপাথাড়ি ট্রাক ও পিকআপ রেখে পেট্রল বেচাকেনা বন্ধ করে দেন।

পরিবহনশ্রমিক এন্তাজুল হক বলেন, ‘এমপিকে অসম্মান করার জন্য এই পাম্প থেকে কোনো শ্রমিক ডিজেল-পেট্রল কিনবে না।’

স্থানীয় ট্রাক, ট্যাংক, লরি, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জয়েনুদ্দীন বলেন, এলাকার এমপি নিজে একটি পাম্পে পেট্রল নিতে গিয়েছেন। আর কর্মচারীরা তাকে পেট্রল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এটা করে ওই পেট্রলপাম্প কর্তৃপক্ষ তাকে অসম্মান করেছে। এ ঘটনায় এমপির অনুসারী শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তাই তারা পাম্পটির যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের বিতরণকর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এমপি স্যারের গাড়ি যখন এখানে পেট্রল নিতে আসে, সে সময় অনেক মোটরসাইকেল আরোহী পেট্রল নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁদের পেট্রল দিতে অস্বীকার করায় মোটরসাইকেল আরোহীরা এমপির গাড়ি দেখিয়ে বলতে থাকেন, দেখব তাঁকে (সাংসদকে) পেট্রল দিচ্ছেন কি না। এ কথা শুনে জনরোষের ভয়ে এমপি স্যারের গাড়িতে পেট্রল দিতে রাজি হইনি।’

বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁওয়ের সভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। কর্মবিরতি সমিতির সিদ্ধান্ত। এ কর্মসূচি চলাকালে এমপি সাহেবের গাড়ি পেট্রল নিতে গেলে সে সময় অনেক ক্রেতার ভিড় ছিল। তাই বিতরণকর্মীরা এমপি সাহেবের গাড়িতে পেট্রল দিতে রাজি হননি। পরে আমিই অন্য একটি পাম্প থেকে তাদের পেট্রল নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিই। এখন শুনছি, ওই ঘটনা নিয়ে একদল শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে পাম্পের কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি আর কী বলল?’

এ বিষয়ে সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘পেট্রল পাম্পে কর্মবিরতি চলছে এটা জানা ছিল না। সে কারণে ঢাকা যাওয়ার পথে ওই পাম্পে পেট্রল নিতে যাই। কিন্তু আমাকে পেট্রল দেওয়া হলো না। এতে আমার অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হতেই পারে।’

জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে তিনটি গতকাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, পেট্রলপাম্প মালিক সমিতিসহ জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। আজ বিকেল পর ওই কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।