২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৬:৫৪
শিরোনাম:

মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ ১ সেকেন্ডের বিষয়, বললেন টিপু মুনশি

পেঁয়াজের দাম নিয়ে আলোচনায় বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক টিপু মুনশি জানিয়েছেন, দাম বাড়ার কারণে তার পদত্যাগ মাত্র এক সেকেন্ডের বিষয়। তবে তাতে কি পেঁয়াজের দাম কমবে বলেও পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনের একটি হোটেলের হলরুমে ‘নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যেও ঊর্ধ্বগতি রোধকল্পে ব্যবসায়ী সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটি এ সভার আয়োজন করে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে বহুবার বলা হয়েছে জেলে দেন, ক্রসফায়ারে দেন। কোথাও বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। আমার এক সেকেন্ডও লাগবে না পদত্যাগ করতে। কোনো সমস্যা নাই আমার। তাতে যদি দেশের সবকিছু বিশেষ করে পেঁয়াজের দাম ঠিক যেতো। এই মন্ত্রীত্ব কাজ করার জন্য, জব করার জন্য। সংকট সমাধানে প্রয়োজনে আগামী ৪০ দিনের মধ্যে ১ লক্ষ টন পেঁয়াজ ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি আমদানি করবে। ভবিষ্যতে পেঁয়াজ সংকট সমাধানে আগামী তিন বছরের মধ্যে উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল হতে সরকার কাজ করছে।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি আমাদের ওভারকাম করতে হলে আমাদের আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। এছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। আমরা ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবো আর ভারত যখন খুশি তখন পেঁয়াজ দেয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে আমরা কীভাবে পেঁয়াজের বাজার ঠিক রাখবো? উপায় একটাই আমাদের এই পণ্য উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। সেদিন আমি এবং প্রধানমন্ত্রী বসেছিলাম। পেঁয়াজ নিয়ে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে আমাদের যেভাবে হোক আত্মনির্ভরশীল হতেই হবে।

মন্ত্রী বলেন, ক্রাইসিস আমাদের আছে। তবে এই ক্রাইসিস সবসময় থাকবে না। পেঁয়াজ ডাবল-ট্রিপল দামে কিনে আমরা মরে যাবো না। আমাদের শিক্ষা হয়েছে। কথায় আছে, কখনো কখনো বিপদ সম্পদে রুপান্তর হয়। ক্রাইসিস আমরা ফেস করবো, ওভারকামও করবো। গত ৬দিন ধরে মিশর থেকে পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ-তারা বলেছে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টন পেঁয়াজ দেবে। সবচেয়ে আনন্দের কথা তারা বলেছে, তারা এক টাকাও প্রফিট করবে না। যত কোটি টাকা লাগে ইনভেস্ট করবে। এক টাকা লাভ করবে না। গত ৩ দিন ধরে তারা টিসিবিকে যা দিয়েছে সেটা সর্বসাকুল্যে খরচ পড়েছে সাড়ে ৪২ টাকা। তারা সেই দামের কস্ট প্রাইসের কাগজ পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছে। তবে সমম্যাটা হয়েছে এই কোয়ান্টিটি যথেষ্ট নয় আমাদের বাজার সার্ভ করার জন্য। তবে একটাই পথ সেটি হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করা। যারা সময়টাকে সুযোগ হিসেবেকাজে লাগাচ্ছে তারা এক ধরনের মুনাফা লোভী। যারা দুর্ভিক্ষের সামনে, ক্রাইসিসের সামনেও নিজেদের মূল্যবোধকে জাগ্রত করে না, তারা ব্যবসায়ী হতে পারে না।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে অভুক্ত রেখে ক্রাইসিসে রেখে আপনারা প্রফিট করেন সমস্যা নাই, লজিক্যাল প্রোফিট করেন। ৫টাকা লাভ রেখে বাজারে পেঁয়াজ ছাড়েন। এরপরও বাজারে ৫০/৫৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ হবে। এবার যখন পেঁয়াজ উঠবে আমি কোনো ধরনের আমদানি করতে দেবো না। আমার উৎপাদকদের দাম পেতে হবে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর যখন ভারত পেঁয়াজ বন্ধ করে দিল। সেদিন সন্ধ্যার সময়ে ঢাকার বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কথা নয়। পেঁয়াজ তো তখন স্টকে ছিল। কোনো কোনো ব্যবসায়ী সঙ্গে সঙ্গে সেই সুযোগটা নিয়ে নিয়েছে।

আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিতে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানক ও সদস্য সচিব আব্দুস ছাত্তার।