২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:০৪
শিরোনাম:

এক ম্যাচ আগেই বাংলাদেশের সিরিজ জয়

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর এবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। কিউইদের ৬ উইকেটে হারিয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ১ ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

৯৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতে উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল স্বাগতিকরা; এরপর নাঈম-মাহমুদউল্লাহর দৃড়তায় সেই ধাক্কা সামলে ওঠে। নাঈম ২৯ রান করে আউট হলেও মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষ করেই আসেন। তিনি অপরাজিত ছিলেন ৪৩ রানে। সঙ্গে আফিফ ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বাংলাদেশ: ১৯.১ ওভারে ৯৬/৪

নিউ জিল্যান্ড: ১৯.৩ ওভারে ৯৩

দুই রান নিতে গিয়ে আউট নাঈম

টিকনারের শর্ট লেন্থের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে পুল করেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। এই পরিস্থিতি ১ রানই যথেষ্ট ছিল; কিন্তু নাঈম-মাহমুদউল্লাহ ২ রান নিতে গিয়ে বিপদ বাড়ান। নাঈম ডাইভ দিয়েছিলেন কিন্তু কাজ হয়নি; তার আগেই দিয়াজের থ্রো থেকে স্ট্যাম্প ভাঙেন লাথাম। ১টিকে করে ছয়-চারে নাঈম ৩৫ বলে ২৯ রান করেন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৩৪ রান।

নাঈম-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে বাংলাদেশের প্রতিরোধ

লিটন দাস ফেরার পর জোড়া পতন হয় বাংলাদেশের। ৮ রানে সাকিব আউটের পর ০ রানে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। থিতু হওয়া মোহাম্মদ নাঈমকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। জোড়া পতনের ধাক্কা সামলে দুজনের জুটি থেকে এখন পর্যন্ত আসে ৩০ রান। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৪২ বলে ৩২ রান।

এজাজের জোড়া আঘাতে কাঁপল বাংলাদেশ

ছোট লক্ষ্যে সাকিব আল হাসান ভালো অবদান রাখতে পারলেন না। মাত্র ৮ রান করে এজাজ প্যাটেলের বলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেট হারান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ব্যাটিং লাইন ছেড়ে বল মিস করেন। পেছন থেকে টম ল্যাথাম স্টাম্পিং করেন তাকে। মাঠে নেমে তিন বল খেলে কিউই স্পিনারের দ্বিতীয় শিকার হন মুশফিকুর রহিম। ডাক মারেন তিনি।

প্রথম চার মারার পরই আউট লিটন

মাত্র ৯৪ রানের লক্ষ্য। তারপরও সতর্ক শুরুতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভালে লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম চার রান তোলেন। তৃতীয় ওভারে লিটন মিডউইকেট দিয়ে চার মারেন কোল ম্যাককনচিকে। পরের বলেই উইকেটের পতন। লিটন ৬ রান করে ফিন অ্যালেনের ক্যাচ হন। ডিপ মিডউইকেটে দারুণ ক্যাচ ধরেন কিউই ফিল্ডার।

৯৪ রান করলেই বাংলাদেশের সিরিজ জয়

শুরুতে নাসুম আহমেদ ও পরে মোস্তাফিজুর রহমানের আঘাতে ১০০ রানও করতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। দুজনেই নেন ৪টি করে উইকেট। ১৯ ওভার ৩ বলে ৯৩ রানে অলআউট হয় নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশের সামনে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ালো ৯৪ রান। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন উইল ইয়ং। এ ছাড়া টম লাথাম ২১ ও ফিন অ্যালেন ১২ রান করেন।

ফিরে এসেই প্যাটেলের স্ট্যাম্প উড়ালেন সাইফউদ্দিন

১৪ ওভার শেষে আঙুলে ব্যাথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল; ১৯ তম ওভারে ফিরেই অ্যাজাজ প্যাটেলের মিডল স্ট্যাম্প উড়ালেন সাইফউদ্দিন। ইয়র্কার বুঝতেই পারেননি প্যাটেল; তার ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ৪ রান।

মোস্তাফিজের জোড়া আঘাত

১৬তম ওভারে বল করতে এসে দ্বিতীয় বলেই ব্লান্ডেলকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজ। মিডঅনে থাকা নাঈম শেখের দারুণ ক্যাচে ১০ বলে মাত্র চার রান করেন ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। একই ওভারের শেষ বলে কোল ম্যাককনচিকে ফেরান মোস্তাফিজ। নিজে বল করে নিজেই দারুণভাবে ক্যাচটি ধরেন। ৩ বলে ০ রান আসে ম্যাককনচির ব্যাট থেকে।

মাঠ ছাড়লেন সাইফউদ্দিন

ইনিংসের ১৪তম ওভারে বল ধরতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পান সাইফউদ্দিন। এরপর তাকে মাঠ ছেড়েই চলে যেতে হয়। ১৪ ওভারের শেষ বলে উইল ইয়ং সোজসুজি ব্যাট চালান; সাইফদ্দিন ধরার জন্য হাত বাড়িয়েছিলেন। প্রচণ্ড গতিতে থাকা বল তার আঙুলে লাগলেও থামেনি। উলটো ব্যথা পান। ফিজিও এসে দেখার পরও কাজ হয়নি; শেষ পর্যন্ত তাকে উঠে যেতে হয়। একই ওভারে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান ব্লান্ডেলের পায়ে টান লাগে।

নাসুমের ঘূর্ণিতে বিধ্বস্ত নিউ জিল্যান্ড

শুরু থেকেই কিউইদের ভোগাচ্ছেন নাসুম আহমেদ। প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট নেওয়ার পর এবার নিজের চতুর্থ ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন তিনি। পরপর দুই বলে ফেরান হেনরি নিকোলস ও কলিন দি গ্র্যান্ডহোমকে। হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল এই স্পিনারের সামনে তবে নতুন ব্যাটসম্যান টম ব্লান্ডেল লাপিয়ে উঠা বলটি ব্যাট না বাড়িয়েই ছেড়ে দেন। ওই ওভারে কোনো রান না দিয়ে জোড়া শিকার করেন নাসুম। চার ওভারে দুই মেডেনে মাত্র ১০ রান দিয়ে চার উইকেট নেন এই স্পিনার।

লাথামকে ফেরালেন মেহেদী

শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর উইল ইয়ং-টম লাথাম জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাগড়া দিলেন শেখ মেহেদী। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে পরাস্ত হন; নুরুল হাসান সোহান স্ট্যাম্পিং করতে ভুল করেননি। ২৬ বলে ২১ রান করে ফেরেন লাথাম; ভেঙে যায় ৩৫ রানের জুটি।

পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত বাংলাদেশ

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে কিউইরা রান তোলে মাত্র ২২টি, এর মধ্যে ডট বল ছিল ২৩টি। দুই উইকেটই নিয়েছেন নাসুম আহমেদ। প্রথম ওভারেই রাচিন রবীন্দ্রকে ফেরানোর পর তৃতীয় ওভারে এসে ফেরান ফিন অ্যালেনকে।

দুই ওপেনারকে ফেরালেন নাসুম

প্রথম ওভারে রাচিন রবীন্দ্রকে ফিরেয়ে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন, এক ওভার না যেতেই আবার আঘাত হানেন নাসুম। এবার ফেরালেন ফিন অ্যালেনকে। নাসুমের লেন্থ বলে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন সাইফউদ্দিনের হাতে। ৮ বলে ১২ রান করেন অ্যালেন।

প্রথম ওভারেই নাসুমের আঘাত

ইনিংসের প্রথম ওভারেই নিউ জিল্যান্ডের ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন নাসুম আহমেদ। আউটসাইড অফে নাসুমের ঘূর্ণি বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্র। কিন্তু ঠিকঠাক ব্যাটে বল লাগাতে পারেননি। শর্ট ফাইন লেগ থেকে দারুণ ক্যাচ ধরেন সাইফউদ্দিন। এই ওভারে মেডেন দিয়েছেন নাসুম। রবীন্দ্র ফেরেন ০ রানে।

ব্যাটিংয়ে নিউ জিল্যান্ড, অপরিবর্তিত বাংলাদেশ একাদশ

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে আগে ফিল্ডিং করবে বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলায় বিকেল ৪টায় ম্যাচটি শুরু হবে। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন টম লাথাম। বাংলাদেশ দলে কোনো পরিবর্তন আসেনি। নিউ জিল্যান্ড দুইটি পরিবর্তনে একাদশ সাজিয়েছে। দলে এসেছেন ব্লায়ের টিকনের ও হাশিম ব্যানেট।

সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। আজ জিতলেই প্রথমবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে নিউ জিল্যান্ড মরিয়া সমতা ফেরাতে।

টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার কারণ ব্যাখায় নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম বলছিলেন, স্কোরবোর্ডে আমরা ভাল রান জমা করতে চাই। সিরিজে সমতা আনতে হলে এই ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। শেষ ম্যাচের পারফরমেন্স আমাদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আমরা জানি এটা নতুন দিন। নতুন ম্যাচ। সবকিছুই নতুন করে সাজাতে হবে।

সিরিজে টানা চতুর্থ ম্যাচে কোন বদল না এনে খেলছে বাংলাদেশ। টস পর্বে দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জানান, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী তবে নিউ জিল্যান্ডের এই দলের বিরুদ্ধে লড়াই যে চ্যালেঞ্জিং হবে সেটা আমরা জানি। আশা করছি গেল ম্যাচের ভুল কাটিয়ে উঠতে পারবো এই ম্যাচ। আজই আমরা সিরিজ জিততে চাই।

সিরিজ জয়ের জন্য দলের খেলোয়াড়দের কাছে অধিনায়কের একটা সাফ বার্তা- ম্যাচ জিততে হলে ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে।

বাংলাদেশ একাদশ: মোহাম্মদ নাঈম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নুরুল হাসান সোহান (উইকেটকিপার), আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান ও নাসুম আহমেদ।

নিউ জিল্যান্ড একাদশ: রাচিন রবিন্দ্র, ফিন অ্যালেন, উইল ইয়ং, টম ল্যাথাম (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, হেনরি নিকোলস, টম ব্ল্যান্ডেল, কোল ম্যাককনচি, আজাজ প্যাটেল, ব্লায়ার টিকনার ও হামিস বেনেট।