১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:২৮
শিরোনাম:

আচারের ব্যবসার আড়ালে আইসের কারবার করতো তারা!

আচার ব্যবসার আড়ালে আইস নামক মাদকের কারবার করতো চক্রটি। নৌপথ ব্যবহার করে তারা মাদকের চালান দেশে নিয়ে আসতো। চক্রটি এর আগে ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিল। বিগত কয়েক মাস ধরে তারা আইস পাচার করে আসছিল। পরে আচারের প্যাকেটে মাদক ঢুকিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিতো চক্রটি।

কাপড় ও আচারের ব্যবসার আড়ালে মাদকের কারবারের এমন ঘটনার তথ্য পেয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কেজি আইসের সবচেয়ে বড় একটি চালানসহ বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ টেকনাফ আইস কারবারের অন্যতম হোতা মো. হোছেন ওরফে খোকন ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

আজ কাওরান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মাদক হলো আইস বা ক্রিস্টাল মেথ। আইসে ইয়াবার মূল উপাদান এমফিটামিন এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুণ ক্ষতিসাধন করে এই আইস। এটি সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিস্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষন্নতার ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে এটির নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এই মাদকের প্রচলনের ফলে তরুণ-তরুণীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হয়। এই মাদকে আসক্ত হয়ে নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে।

তিনি আরও জানান, এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য আজ ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে টেকনাফ আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা মো. হোছেন ওরফে খোকন ও তার সহযোগী মোহাম্মদ রফিককে গ্রেপ্তার করে। এ সময় জব্দ করা হয় প্রায় পাঁচ কেজি ৫০ গ্রাম পরিমাণ আইস। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ১২.৫ কোটি টাকা। এছাড়াও তাদের নিকট হতে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গোলাবারুদ, দুটি মোবাইল তিনটি দেশি/বিদেশি সীমকার্ড এবং মাদক ব্যবসায় ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুজন টেকনাফ কেন্দ্রিক মাদক চক্রটির সদস্য। এই চক্রটি বিগত প্রায় কয়েক বছর ধরে অবৈধ মাদক ইয়াবার কারবার করে আসছে। সিন্ডিকেটে ২০-২৫ জন যুক্ত রয়েছে। চক্রটির সদস্যরা সাধারণ নৌপথ ব্যবহার করে মাদকের চালান দেশে নিয়ে এসে থাকে। বিগত কয়েক মাস ধরে তারা আইস পাচার করে আসছিলো। ঢাকার উত্তরা, বনানী, গুলশান, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চক্রটির সদস্য রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার মো. হোছেন এই চক্রের মূল হোতা। সে তার কাপড়/আচারের ব্যবসার আড়ালে মাদকের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতো। তার নামে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ রফিক এই চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য এবং টেকনাফে অটোরিকশা চালকের ছদ্মবেশে মাদক স্থানান্তর করতো।