২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৫৩
শিরোনাম:

আদালতে বাবা-চাচা, মডেল তিন্নি হত্যা মামলার রায় পেছালো

হত্যার ১৯ বছর পর মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি (২৪) হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তার বাবা ও চাচা আদালতে হাজির হয়েছেন। তাই মামলার রায় পেছালো।

আজ সোমবার এ মামলায় রায় ঘোষণার দিন ঠিক ছিল। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায়ের জন্য নথি উপস্থাপন হলে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর ভোলা নাথ দত্ত জানান, নিহত তিন্নির বাবা-চাচা আদালতে উপস্থিত হয়েছেন। তারা রায় হবে জানতেন না। পত্রিকায় দেখে এসেছেন।

ভোলা নাথ দত্ত আরও বলেন, ‘বাবার আংশিক সাক্ষ্য হয়েছিল। আর চাচার সাক্ষ্য হয়নি। তারা সাক্ষ্য দিতে চান। আমরা রায় থেকে উত্তোলনের জন্য সময় চাইবো।’

ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কেশব রায় চৌধুরী আবেদন দেওয়ার জন্য ৩০ মিনিট সময় মঞ্জুর করেন। আবেদন দেওয়ার পর শুনানি শেষে বিচারক আগামী ৫ জানুয়ারি সাক্ষীর জন্য দিন ঠিক করেন।

মামলার একমাত্র আসামি জাতীয় পার্টি সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভি। যিনি বিদেশে পলাতক রয়েছেন।

মামলা থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি (২৪) খুন হন। বুড়িগঙ্গার চীন-মৈত্রী সেতুর নিচে তার লাশ পাওয়া যায়। একই বছরের ১১ নভেম্বর কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশ হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর সাবেক ছাত্রনেতা ও সাংসদ গোলাম ফারুক অভির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

অন্যদিকে তিন্নির স্বামী সাফকাত হোসেন পিয়ালসহ পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিরা হলেন-এবাইদুল্লাহ, গাজী শরিফ উদ্দিন, সফিকুল ইসলাম জুয়েল ও সোমনাথ সাহা।

মামলাটির অভিযোগের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যু হওয়ায় আইন অনুযায়ী, অভির পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিযুক্ত করা হয়। মামলায় তিন্নির দুই গৃহকর্মীর সাক্ষ্য ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভি এখন কানাডায় রয়েছেন। ‘৯২ সালে রমনা থানায় দায়ের করা একটি অস্ত্র মামলার ১৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের রায়ের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান। অভি তিন্নিকে হত্যার আগে তার স্বামী পিয়ালের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে তাকে ফাঁদে ফেলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ‘দুর্র্ধষ’ অভি তাকে কখনোই স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। বরং বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিলে পরিকল্পিতভাবে তিন্নিকে খুন করে লাশ চীন-মৈত্রী সেতুর নিচে ফেলে রাখা হয়।

মামলায় ২০১০ সালের ১৪ জুলাই অভির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। এরপর পলাতক অভি এই মামলা সংক্রান্তে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা করলে এই মামলার বিচার দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। পরে হাইকোর্ট রিট খারিজ করে দিলে মামলার বিচার আবার শুরু হয়। আদালত এ মামলার বিচারকালে চার্জশিটভূক্ত ৪১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।