২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:১১
শিরোনাম:

‘সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করবেন না’

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তারা বলেন, ‘আমাদের সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করবেন না। আমাদের দাবি ন্যায়সংগত।’

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ মানববন্ধন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন- হারুনুর রশিদ এমপি, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এমপি, মোশাররফ হোসেন এমপি, সংরক্ষিত নারী আসনের ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি। এ ছাড়াও অংশ নেন উখিল আবদুস সাত্তার এমপি, আমিনুল ইসলাম।

এ কর্মসূচি ঘিরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে ফুটপাত দিয়ে মানুষের চলাচলও নিয়ন্ত্রণ ছিল বলে বিএনপি এমপিরা জানান।

হারুনুর রশিদ এমপি বলেন, ‌‘মধ্যরাতে নির্বাচিত বর্তমান যে পার্লামেন্ট রয়েছে, সেখানে বিএনপি থেকে মাত্র সাতজন সংসদ সদস্য। আমরা আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিসায় বিদেশ পাঠানোর দাবিতে এ মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি। আজকে বলার আপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের মানুষ এমন একটা সময়ে উপনীত হয়েছে যেখানে মানবাধিকার, সুশাসন, আইনের শাসন সাংঘাতিকভাবে অনুপস্থিত। সত্যিকার অর্থে এসবের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের যে উত্তর দিয়েছেন তা গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। তার বক্তব্য প্রমাণ করে খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। ’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে এই সাংসদ বলেন, ‘আমাদের সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করবেন না। আমাদের দাবি ন্যায়সংগত। ’

দাবি মানা না হলে তারা জাতীয় সংসদে থাকবেন কি না, সেটি চিন্তাভাবনা করবেন বলেও জানান হারুনুর রশিদ এমপি। তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে সারা দেশের মানুষ উজ্জীবিত হবে, এটি জেনে সরকার তাকে মুক্তি দিচ্ছে না। জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে পেছন ফিরে ডিকটেড করেছেন, তা লজ্জাকর। আর আইনমন্ত্রী যেভাবে ব্যাখ্যা দেন, তা হাস্যকর।’

মানববন্ধনে জি এম সিরাজ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কিন্তু সরকার চিকিৎসকের কথা উপেক্ষা করছে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আবার জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে। সরকার চাইলে খালেদা জিয়ার বাসভবনকে সাবজেল ঘোষণা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে পারে। ’

তিনি আরও বলেন, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যে শারীরিক ভাষা দেখা গেছে, তাতে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা কিছু আশা করেন না। রাষ্ট্রপতিকে তার ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান তিনি।

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সরকার ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার কিছু হলে দায় সরকারকেই নিতে হবে। দেশে আইনের শাসন থাকলে খালেদা জিয়া এমনিতেই জামিন পেতেন। এখনো ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে। আইনমন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা অপব্যাখ্যা।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এর আগে তারা সংসদে বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হলে তারা সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন। সরকারের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, বিএনপি সংসদে থাক বা না থাক, তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না।’