২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ২:৫৯
শিরোনাম:

ভিক্ষার সময় সৌদি পুলিশের হাতে আটক মতিয়ার এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত

হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি পুলিশের হাতে আটক মতিয়ারের পরিচয় পাওয়া গেছে। সে গাংনী উপজেলার সিন্দুরকৌটা গ্রামের মৃত হারুনর রশীদের ছেলে। তার নামে গাংনী থানায় সন্ত্রাসীর অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মামলায় খালাসপ্রাপ্ত কিনা তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।

জানা গেছে, এক সময় এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল মতিয়ার। কুষ্টিয়া-মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজ হাতে বোমা তৈরির সময় তার দুই হাত উড়ে যায়। তারপর থেকেই তার দুই হাত নেই। এছাড়াও এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভয়ে এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত মতিয়ার। ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চান না। হাত হারানোর পর থেকেই মাঝে মাঝে সে এলাকা থেকে বের নিখোঁজ হয়ে যায়। কোথায় কিভাবে থাকে তাও কেউ বলতে পারে না। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময় এলাকায় ফিরে এসে ১০ থেকে ১২ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি সৌদিতে ধরা পড়ার পর সবাই মনে করছেন, তার হাত না থাকাকে পুঁজি করে বাইরের দেশে ভিক্ষাবৃত্তির আশ্রয় নিয়েছে সে। কারণ শোনা গেছে এর আগেও তিনবার হজে গিয়েছে সে। হজ থেকে বাড়ি ফেরার পরই সে প্রায় সময় জমি কিনে থাকে।

জানা গেছে, মতিয়ার সৌদি আরবে যান ধানসিঁড়ি ট্র্যাভেল এয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। সেখানে ব্যাগেজ হারিয়ে যাবার নাটক সাজিয়ে নামেন ভিক্ষাবৃত্তিতে। এ ঘটনায় ২২ জুন মতিয়ার সৌদি পুলিশের হাতে আটক হন। ওই হজযাত্রীকে ‘গাইড করার মতো কোনো মোয়াল্লেম এবং বসবাসের বাড়ি বা হোটেলও ছিল না। গত ২৫ জুন ওই এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন।

ধানসিঁড়ি ট্র্যাভেলকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, “আপনার এজেন্সির একজন হজযাত্রী মো. মতিয়ার রহমান মদিনা শরীফে ভিক্ষা করতে গিয়ে সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় এবং এ ঘটনা জানার পর বাংলাদেশ হজ মিশনের একজন কর্মী থানায় মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনেন।” তবে কী জবাব দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি।

মতিয়ার রহমানের বড় ভাই আতিয়ার রহমান বলেন, আমার বড় ভাই প্রায় সময় বাইরে থাকে। তবে শুনেছি এবার সে সৌদিতে হজ পালন করতে গিয়েছে। এর আগেও সে কয়েকবার হজে যাবার চেষ্টা করেছে কিন্তু নানা জটিলতায় যেতে পারেননি। তবে কী জটিলতা ছিল তার কিছুই জানাননি তিনি।

তবে তিনি বলেন, আমার ভাই বর্তমানে ১০ থেকে ১২ বিঘা জমির মালিক। এগুলো পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বলেও তিনি দাবি করেন। তবে তিনি সৌদিতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন কিনা তা আমি কিছুই জানি না।

মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহাম্মেদ জানান, মতিয়ার রহমানকে কখনোই এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখা যায়নি। তবে সৌদিতে গিয়ে সে যা করেছে তা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এতে আমাদেরও এলাকার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মতিয়ারের নামে গাংনী থানায় দু’টি মামলা রয়েছে। তবে সে মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত না বেকসুর খালাস পেয়েছেন তার কিছুই জানা নেই আমার।