২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৪:৪১
শিরোনাম:

বিএনপি ছাড়া আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না

ঢাকা: বিএনপি ছাড়া আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা পাবে না বলে দাবি করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানান।

পাশাপাশি তারা ইভিএমের বিরোধীতা করেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আগামী ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে নির্বাচন পরিচালনা খাতে বরাদ্দের ছাটাই প্রস্তাবের আলোচনার অংশ তারা এ সব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

এদিকে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ। এই রায়ের বাইরে এক সুতাও সরকার যাবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচনী ইনস্টিটিউশনগুলো যদি শক্তিশালী না হয়, নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি যদি জনগণের আস্থা বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়, সেই দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। বিগত দশ বছরে নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন নির্বাচন করে না। নির্বাচন করে স্থানীয় পর্যায়ের প্রশাসন ও জনপ্রশাসনের ব্যক্তিরা।

হারুন বলেন, বর্তমান ইসি বলছে ইভিএম-এর ভোট কক্ষে যে ডাকাত থাকে সেটি ধরাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারের যদি সদিচ্ছা না থাকে কোনো ভাবেই নির্বাচন সঠিক করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল ইভিএম চাচ্ছে না। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ চাচ্ছে ইভিএম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে যখন আন্দোলন করেছেন, তখন তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। আজকে বিএনপিকে ছাড়া কি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে? হবে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে কিভাবে নির্বাচনে আনবেন সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আসতে হবে।

বিএনপির আরেক সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে যদি নির্বাচনই না থাকে, মানুষ যদি তার ভোটই প্রয়োগ না করতে পারে, মানুষ যদি তার পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে না পারে, আগে থেকে যদি ব্যালটে বাক্স ভরা থাকে, দিনের ভোট যদি রাতে হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন দিয়ে হবে কি? নির্বাচন যে এখন একটা মল্লযুদ্ধ, তার একটা বড় প্রমাণ এই নির্বাচন কমিশন শপথ নেওয়ার পরপরই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন জেলনস্কির মতো বিএনপিকে মাঠে থাকতে হবে। ভোট কি একটা যুদ্ধ যে জেলনস্কির মতো বিএনপিকে মাঠে থাকতে হবে?

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, আরেক নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘মেশিনে (ইভিএমে) কোনো সমস্যা নাই, সমস্যা হচ্ছে গোপন কক্ষে যে ডাকাত ঢুকে থাকে। ’ এই ডাকাত যে শুধু দলীয় ক্যাডার তা নয়, এরমধ্যে আছে পুলিশ ও প্রশাসন। এই ডাকতদের যেভাবে পুরস্কৃত করা হয়, সেই পুরস্কার দেখে বোঝা যায় ভবিষৎতে আরও ডাকাত বাড়বে। এই ইসির অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়।

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, নির্বাচন করে কারা? নির্বাচন করে রাজনৈতিক দল। স্টেকহোল্ডার হচ্ছি আমরা যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। আমরা যদি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি না করি তাহলে ঘরে বসে নির্বাচন কমিশন কোনো দিন কোনোকিছু করতে পারবে না। সব কিছু স্বাধীন। প্রকান্তরে কোনো নির্বাচন কমিশন কোন দিন স্বাধীন না। সমস্ত কমিশনই সরকার দ্বারা গঠিত হয়, সরকারের অধিনে কাজ করে। এটা আয়ুব খানের আমলে হয়েছে জিয়াউর রহমানের আমলে হয়েছে আমাদের আমলে হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এটা চলতেই থাকবে।