২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:৫১
শিরোনাম:

কুয়াকাটায় সমুদ্র গর্ভে বিলীন হচ্ছে দুইটি ধর্মীয় উপাসনালয়ঃ রক্ষার দাবী

জাকারিয়া জাহিদ,কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া দুইটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে! যে কোন সময় সমুদ্রের গ্রাসে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয়রা।

সমুদ্র সৈকত লাগোয়া কুয়াকাটা সাগর সৈকত জামে মসজিদ ও শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দির যা একই স্থানে স্বাক্ষী হয়ে প্রায় দুই যুগ ধরে দাড়িয়ে আছে। চলমান ঋতুতে পরবর্তী সমুদ্রের তীব্র জো-য়ে সাগর গর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে কুয়াকাটা পর্যটন নগরীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিতে যে প্রবাহমান ধারা রয়েছে তা অচিরেই সমুদ্র গর্ভের প্রবল থাবায় পতিত হবে এমটাই জানান দিচ্ছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট গিয়ে সৈকতে নামার সময় পূর্বদিকে একই রাস্তায় প্রথমে মুসলিমদের দোতালা ভবনের একটি জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা। মসজিদ সংলগ্ন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশাল বাউন্ডারীর মধ্যে ৩ টি ভবনে ৪টি মন্দির রয়েছে। যেখানে গত বছরের শেষ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নামে মাত্র জিও ব্যাগ ও জ্যিওটিউব দিয়ে কোন রকম সৈকত রক্ষা করার জন্য কাজ করেছিল তা চলমান বছরে সমুদ্রের জো-য়ে সাগরের তীব্র ভাঙ্গনের মুখে বিলীন হয়ে গেছে।

কুয়াকাটা আগত পর্যটক সহিদুর রহমান জানান, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে সমুদ্র সৈকতে ঘেঁষে থাকায় ধর্মীয় এই প্রতিষ্ঠান দুইটিতে আগত ভ্রমন পিপাসুরা আনন্দ বিনোদনের পাশাপাশি খুব সহজে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের একমাত্র পন্থা হিসেবে দেখছেন এই ধর্মীয় উপাসনালয় দুইটিকে।

অন্যদিকে অনেক কষ্ট করে স্থানীয়রা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পাশে একমাত্র এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দুইটি গড়ে তুলেন। আল্লাহর ঘর এই মসজিদটি এভাবে সাগরের বুকে বিলিন হবে তা মানতে নারাজ। এমন মন্তব্য করেন ঐ মসজিদের সাবেক খতিব ও ইমাম ক্কারী নজরুল ইসলাম।

তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সৈকতের তীরে মসজিদটিতে আমি ইমামতি করেছি। অনেক স্মৃতি বিজড়িত আছে; তখন কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পথ ছিলো প্রায় ১হাজার মিটার দূরে। এখন একেবারেই মাত্র কয়েক মিটার নিকটে এসে গেছে সমুদ্রের পানি। সমুদ্র সৈকতে নামলেই মসজিদ আর সাগরের ঢেউ দেখলেই কান্না আসে; কখন যেন এই মসজিদটি বিলিন হয়ে যায়! তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি দাবি করব যাতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় সমুদ্র সৈকতে অতি দ্রুত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মসজিদ-মন্দিরসহ সৈকত এলাকাকে রক্ষা করুন।

শ্রীশ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, চলমান বর্ষা মৌসুমে সাগরের তীব্র ভাঙ্গনের কবলে মন্দিরের বাউন্ডারী দেয়াল পরে যাবে! তাই প্রতিবারই এই সময় পাউবোর সহায়তা সামান্য অস্থায়ী ভাবে জ্যিওটিউব দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে। এনিয়ে খুব আতঙ্কে থাকি কখন না জানি বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটে যায়।

এব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) আরিফ হোসেন ‘দৈনিক ঢাকা টাইমস’কে বলেন, মন্দিরও ও মসজিদ রক্ষা করার জন্য ইতোপূর্বে এ্যাভাব বিল ডাকা হয়েছিল সেখানে ঠিকাদারগণ অনিহা প্রকাশ করেছে। তাই এখন জরুরী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান দুইটিসহ সৈকত রক্ষার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করার চেষ্টা চলছে।