২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:১৭
শিরোনাম:

অধ্যক্ষকে এমপির পেটানোর ঘটনায় ফোনালাপ ফাঁস, যা জানা গেল

অবশেষে বেরিয়ে পড়ল থলের বিড়াল। অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে এমপি ফারুক চৌধুরী কর্তৃক পেটানোর ঘটনার বিষয়ে অধ্যক্ষের একটি অডিও শনিবার সকালে ফাঁস হলো।

অডিওটির কপি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে গত ৭ জুলাই ফারুক চৌধুরী এমপি পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। অধ্যক্ষ সেলিম রেজা ১১ জুলাই তাকে ফোন করে পুরো ঘটনা বলে তার সহযোগিতা চেয়েছিলেন।

সেই সূত্রে দৈনিক যুগান্তর প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে ১৩ জুলাই। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনাটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন এমপি ফারুক চৌধুরী ও অধ্যক্ষ সেলিম রেজা দুজনেই। এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামানকে দায়ী করা হয়। এটিকে তার বিরুদ্ধে রটনা বলেও দাবি করেন ফারুক চৌধুরী এমপি।

একই সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাও দাবি করেন এমপি সাহেব তাকে মারেননি। পুরো ঘটনাটি মিথ্যা ও সাজানো। শেষে ১০ মিনিটের ফাঁস হওয়া অডিওতে সেলিম রেজা গত ৭ জুলাইয়ের রাতের ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা দিয়েছেন কোনো একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে ফোন করে। শেষে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে এলো।

এদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষকে মানবিক কায়দায় পেটানোর অভিযোগ সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছিলেন। তবে গত ১১ জুলাই রাতে যুগান্তরের এই প্রতিবেদক অধ্যক্ষ সেলিম রেজার পূর্ব রায়পাড়ার ২৩৮/১ নম্বর বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।

প্রতিবেদককে তিনি এমপি কর্তৃক মারধরের কথা সবিস্তারে বর্ণনা করেন। সেই বর্ণনা অনুযায়ী এবং ঘটনা অনুসন্ধান করে গত ১৩ জুলাই দৈনিক যুগান্তরে প্রথম এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় হয়। অধ্যক্ষ সেলিম রেজা এমপি ফারুক চৌধুরীর হাতে পিটুনি খেয়ে কোন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন তাও তিনি জানিয়েছিলেন এই প্রতিবেদককে।

কিন্তু ১৩ জুলাই যুগান্তরে ‘অধ্যক্ষকে পেটালেন এমপি’ শিরোনামে খবর প্রকাশের পর অধ্যক্ষ সেলিম রেজা ডিগবাজি দেন। চলে যান আত্মগোপনে। হঠাৎ করেই গত ১৪ জুলাই এমপি ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে হাজির হয়ে তার পাশে বসে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো ঘটনাটিকে অস্বীকার করেন। তারা ঘটনাটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন। সেখানে যুগান্তরের সাংবাদিককেও দোষারোপ করা হয়।

জাতীয় বি্শ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির কাছেও একই বক্তব্য দেন। ফলে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পেটানোর ঘটনাটি নিয়ে বিভ্রান্তিও তৈরি হয় জনমনে। অবশেষে শনিবার সেলিম রেজার জবানিতে ফাঁস হওয়া কথোপকথনে বেরিয়ে এসেছে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার পুরো ঘটনা। যুগান্তরের পাঠকদের জন্য অডিওটি এই প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।

উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই তার মালিকানাধীন থিম ওমর প্লাজায় গোদাগাড়ী উপজেলার সাতজন কলেজ অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের সামনে রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল সেলিম রেজাকে মারপিট করেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।