২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:৩৯
শিরোনাম:

মোটর বসিয়ে উত্তরার সড়কের পানি সরাচ্ছে পুলিশ

রাজধানীর উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কে আজ সকাল থেকে ভয়াবহ যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়েছেন। বৃষ্টির কারণে সড়কের খানাখন্দ ও গর্তে পানি জমে থাকায় সকালে এক প্রকার স্থবিরতা নেমে আসে ওই সড়কে। এ অবস্থায় দুপুর থেকে মোটর বসিয়ে সড়ক থেকে পানি সরানোর উদ্যোগ নেয় ট্রাফিক পুলিশ। এ পরিস্থিতির জন্য বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল প্রায় থমকে ছিল। ঢাকার ভেতরে প্রবেশ এবং বের হওয়ার দুই পথেই ছিল তীব্র যানজট। সেই সঙ্গে সড়কের মোড়গুলোতে ছিল কাজে বের হওয়া মানুষের ভিড়। এ কারণে ফুটপাথ দিয়ে হাঁটাও দায় হয়ে পড়ে। যানজটের কারণে বাসে না উঠে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন অনেকে। যারা বাসে করে যাচ্ছিলেন যানজট তীব্র হওয়ায় তারাও বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন।

এই পথে যাতায়াতকারীরা বলছেন, এমনিতেই এই সড়কে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। তার মধ্যে আজ রোববার ভোরের বৃষ্টি ভোগান্তি বাড়িয়েছে কয়েক গুণ।

আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকামুখী সড়কে উত্তরা, এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত, বিশ্ব রোড, বনানী, কুড়িল প্রগতি সরণিজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে গাজীপুরগামী সড়কে বনানী, বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, কাওলা, এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ছাড়িয়ে গেছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

সকালের বেহাল অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি দুপুরেও। তবে স্থবির সড়কের পানি সরিয়ে যান চলাচল শুরুর ব্যবস্থা করেছে ট্রাফিক পুলিশ। তাতেও অবশ্য গাড়ির বাড়তি চাপ সামলানোর মতো স্বাভাবিক হয়নি সড়কের অবস্থা।

যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোরের বৃষ্টিতে উত্তরার সড়কের বেশকিছু এলাকা ডুবে যায়। উন্নয়নমূলক কাজের কারণে সড়কের অনেক জায়গায় খানাখন্দ, গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সেসব গর্তে পানি জমে গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে অফিসগামী মানুষ সড়কে অবস্থান নেওয়ায় হ য র ব ল অবস্থা তৈরি হয়।

তিনি বলেন, সড়কের অবস্থা স্বাভাবিক করতে যান চলাচলের উপযোগী করতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় মোটর বসিয়েছি। আমাদের ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা রাস্তায় গর্তের সামনে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। জমে থাকা পানি সেচ দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এজন্য বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে।

ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ এলাকায় বিআরটি লাইন-৩ এর হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, টঙ্গী, চৌরাস্তা এবং শিববাড়ি-গাজীপুরসহ ২০.২ কিলোমিটার এলাকার কাজ চলছে। নির্মাণ কাজের কারণে সড়কে অসংখ্য খানাখন্দ ও গর্ত তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এগুলো সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করে না। যে কারণেই আজকের এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিআরটি কর্তৃপক্ষের অবহেলাতেই ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান বলেন, মোটর বসিয়ে উত্তরার সড়কের পানি সরানো হয়েছে। এখন যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে চাপ রয়ে গেছে, গতিও কম। গাড়ির চাপ দিনব্যাপী থাকবে।

যোগাযোগ করা হলে যানজট এবং অফিসগামী মানুষের দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন বিআরটি উত্তরার একাংশের প্রকল্প পরিচালক এ এস এম ইলিয়াস শাহ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ উত্তরায় দীর্ঘ যানজটের জন্য আমরা দুঃখিত। আমরা এর দায় এড়াতে পারি না। যত দ্রুত সম্ভব বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।