২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:০৬
শিরোনাম:

টাকা চুরি করতে গিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা, লোমহর্ষক বর্ণনা

মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মা ও দুই সন্তান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ হত্যা মামলার একমাত্র আসামি তাঁতশ্রমিক আইয়ুব আলী ওরফে সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমববার (২ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনার বিবরণ দেন পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল। গ্রেপ্তার আইয়ুব আলী ওরফে সাগর উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাঁতী গ্রামের মৃত মোকছেদ মোল্লার ছেলে।

তিনি বলেন, গত বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের মবুপুর গ্রামের নিজ ঘর থেকে রওশনারা (২৯), তার দুই ছেলে জিহাদ (১০) ও মাহিন (৩) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত রওশন আরার ভাই নুরুজ্জামান জামাল বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় মামলা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়।

রোববার (২ অক্টোবর) রাত ১২টা দিকে উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাঁতী গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে থেকে আসামি আইয়ুব আলী ওরফে সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাঁতশ্রমিক আইয়ুব আলী ওরফে সাগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, তাঁতের পেশার আয় দিয়ে সংসার না চলায় গত দেড় বছরের মধ্যে চারটি এনজিও থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষুদ্র ঋণ নেন তিনি। সংসার চালানোর পাশাপাশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে তার সৎ ভাগনি রওশন আরার দ্বারস্থ হন।

আরও পড়ুন: ছাগল চুরি করে পালানোর সময় যুবলীগ নেতাকে গণপিটুনি, ভিডিও ভাইরাল

গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি রওশন আরার কাছে এসে টাকা ধার চান। কিন্তু রওশন আরা বলেন, তার কাছে টাকা নেই। আসামি আইয়ুব আলী রওশন আরার ঘরে থাকা চারটি ট্রাঙ্ক দেখে ধারণা করেন এর ভেতরে টাকা আছে। তাই তিনি চুরির সিদ্ধান্ত নেন।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর আবারও তিনি ভাগনি রওশনার বাড়িতে আসেন। রাতে তাদের বাড়িতে থেকেও যান। সবাই একসঙ্গে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার পর আইয়ুব আলী চাবি নিয়ে ট্রাঙ্কের বাক্স খুলে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে রওশনারা নাড়াচাড়া করলে, আইয়ুব আলী ভাবেন হয়তো চুরি দেখে ফেলেছন তিনি। তখনই পাথরের শীল দিয়ে ভাগনির বুকে সজোরে আঘাত ও পরবর্তীতে গলাটিপে হত্যা করেন।

এরপর তিন বছর বয়সী ছোট শিশু মাহিন জেগে উঠলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং অপর শিশু জিহাদ জেগে উঠলে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন আইয়ুব। তিনটি হত্যাকাণ্ডের পর ঘরের চারটি ট্রাঙ্ক খুলে টাকা খুঁজতে থাকেন। কোনো প্রকার টাকা-পয়সা না পেয়ে ভোরে দরজায় শিকল দিয়ে নিজ বাড়িতে পালিয়ে যান।