২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:৫২
শিরোনাম:

পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন লিজ ট্রাস। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ছয় সপ্তাহের মাথায় বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। খবর বিবিসির।

এদিন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে এক বিবৃতিতে পদত্যাগের বিষয়টি জানান তিনি।

লিজ ট্রাস বলেন, অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিরাট এক অস্থিরতার সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছিলেন। কিন্তু যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন, তা পূরণ করতে পারছেন না।

বিষয়টি রাজা তৃতীয় চার্লসকেও অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করব।’

গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে হারিয়ে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হন লিজ ট্রাস। কিন্তু এক মাসের মাথায় অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেংকে বরখাস্ত করেন তিনি। মূলত এরপরই তার প্রধামন্ত্রিত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

গত কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী ট্রাসকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা। তারা বলেন, লিজ ট্রাসের সময় ফুরিয়ে এসেছে। তাকে পদত্যাগ করতে হবে। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম্যানের পদত্যাগের পর চাপ আরও বাড়ে।

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন টোরি এমপি প্রকাশ্যে লিজ ট্রাসকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। দলের সদস্যদের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে এদিনই ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাস। এরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রধানমন্ত্রীর ত্বকমা পেলেন ট্রাস। মাত্র ৪৫ দিন দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ট্রাসের পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী হলেন জর্জ ক্যানিং। ১৮২৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ১১৯ দিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

লিজ ট্রাসের অনিশ্চয়তা শুরু হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর তার সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেং সংক্ষিপ্ত বাজেট উপস্থাপন করার পর। ওই বাজেটে কর কমানোর ঘোষণা দিলে যুক্তরাজ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। কমে যায় ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম। এরপরই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে কোয়াসি কোয়াটেংকে সরিয়ে দেন ট্রাস।

ট্রাসের পদত্যাগের পর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ চ্যালেঞ্জ মূলত দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত করা নিয়ে।

এদিকে ট্রাসের পদত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী লেবার পার্টির নেতা কির স্টারমার। একই দাবি লিব ডেমসের নেতা এড ডেভি ও এসএনপির নেতা নিকোলা স্টারজিয়নেরও।

লেবার পার্টির নেতা স্টারমার বলেন, সরকার চালানোর কোনো এখতিয়ার করজারভেটিভ পার্টির নেই। গত ১২ বছর ধরে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে টোরিরা। ব্রিটিশ জনগণ তাদের চেয়ে আরও ভাল সরকার পাওয়ার দাবি রাখে।