১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৮:৪৮
শিরোনাম:

বিকল্প গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব পেলে ভেবে দেখবে বিএনপি

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগ নদীর তীর ব্যতীত রাজধানীতে বিকল্প প্রস্তাব দিলে সেটা বিবেচনা করবে বিএনপি। রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।

তিনি বলেন, যেকোনো স্থানে সমাবেশ করবো এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার, এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেখানে আগ বাড়িয়ে নাশকতা হবে বলে আমার সাংবিধানিক অধিকারকে আপনারা লংঘন করছেন কেড়ে নিচ্ছেন। আমরা ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করব সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা কর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করছেন। দয়া করে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করবেন না। আমরা যে নয়টি সমাবেশ সম্পূর্ণ করেছি ঠিক একইভাবে ঢাকার সমাবেশ সম্পূর্ণ করব।

ফখরুল বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি’র উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার এক সর্বনাশা প্রতিশোধস্পৃহায় মেতে উঠেছে। সমাবেশকে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য একের পর এক চক্রান্তজাল বিস্তার করে চলেছে। আওয়ামী সরকারের হাতে কখনোই গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকেনি। এদের ইতিহাস ঐতিহ্যে রয়েছে গণতন্ত্রের বিনাশ ঘটিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্থান।

ঢাকার গণসমাবেশকে বানচাল করার জন্য সরকারের নানামূখী দমননীতি এখন সর্বসাধারণের নিকট পরিস্কার হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ‘গণতন্ত্রের মাতা’ সর্বাধিক জনপ্রিয় বেগম খালেদা জিয়ার বাসার সামনে সেই বালির ট্রাকের কায়দায় চেকপোষ্ট- বেরিকেড দিয়ে পুলিশ অবরোধ করে রেখেছে। এটি দেশনেত্রীর উপর নিপীড়নের আরেকটি নতুন মাত্রা। আমি সরকারের এহেন ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন জনপ্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসি রায়ে কারারুদ্ধ রেখে চিকিৎসার সকল পথরুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত প্রান নাশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী সরকার। তার বাসভবন অবরোধ করে এবং জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে থেকে চেকপোষ্ট ও বেরিকেড তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব।পুলিশের আইজিপির বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের আইজি বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে ঘিরে নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তাহলে কেন এই নাটক অভিযান ? সরকার এক সুদূরপ্রসারী অশুভ মাস্টারপ্লানের পথে হাঁটছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যেই জনগণের নিকট সুষ্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার একটি নাশকতামূলক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কিন্তু সরকারের এতে কোন লাভ হবে না। জনগণ দিবালোকের মতোই সবকিছু অবলোকন করছে।

আগামী ১০ ডিসেম্বর পল্টনে বিএনপির গণসমাবেশকে ঘিরে বিএনপি নেতাকর্মীদের পিছনে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে সরকার দাবি করে তিনি বলেন, অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশেও পুলিশ গ্রেফতার ও হয়রানী করেছে, পথে পথে বাধা দিয়েছে, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সহিংস রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়েছে, তারপরেও জনতার স্রোতকে ঠেকাতে পারেনি।

সরকার জঙ্গিবাদের কথা বলে জঙ্গি সৃষ্টি করতে চায়, অগ্নি সন্ত্রাসের কথা বলে, অগ্নি সন্ত্রাস করতে চায় বলেন মির্জা ফখরুল।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন – বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।