২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:১১
শিরোনাম:

কলাপাড়ায় বিস্তৃত মাঠ জুড়ে সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : দূর থেকে তাকালেই মনে হয় প্রকৃতি যেনো বিশালাকৃতির হলুদ গালিচা বিছিয়ে রেখেছে। কাছে
আসলেই দেখা যাবে নীল আকাশের সঙ্গে হলুদ সূর্যমুখীর মায়াবী রূপ। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিস্তৃত মাঠ জুড়ে পরিপক্ক সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কম বেশী চাষ হয়েছে সূর্যমুখীর। মাঠের পর মাঠ ছেয়ে আছে হলুদের আভায়। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদের ছড়াছড়ি।

চোখ জুড়ানো মনোমুগ্ধকর এক অপরূপ সৌন্দর্য। কম খরচে অধিক ফলন ও লাভবান হওয়ায় কৃষকরা সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকে পরেছে। ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বিকল্প পদ্ধতি ও অধিক লাভের আশায় প্রতিবছরই সূর্যমুখী চাষ বাড়ছে বলে মনে করছেন
বিশেষজ্ঞরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর মোট ৫৮০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাইসান-৩৩ ও বারি সূর্যমুখী জাতের ফুলের চাষ বেশি করেছে কৃষকরা। তবে গতবছরের তুলনায় এবছর প্রায় ১’শ
হেক্টর জমিতে এ ফুলের চাষ বেশি হয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় কমবেশি এ সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস নিশ্চিত করেছেন।

কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা তাদের খরচ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন ভালো হবে। এতে তারা সুর্যমূখীর বিচি ৩৫’শ টাকার উপরে মন প্রতি বিক্রি করতে পারবেন। তবে স্থানীয়ভাবে এ বীচ থেকে তৈল উৎপাদনের সুযোগ থাকলে আরও লাভবান হবেন বলে সূর্যমুখী চাষীরা জানান। উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের বোদ্ধপাড়া গ্রামের কৃষক জুলহাস ব্যাপারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বর্তমানে তার ক্ষেতের ফলন খুব ভালো হয়েছে। শুরুতে
ব্যকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও কৃষি অফিসের পরামর্শে তা সেরে উঠেছে। এবছর সে ১০ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ টাকা। ফসল উঠলে ৫ লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে এ চাষি জানান।
তবে টিয়াখালী ইউনিয়নের পূর্ব রজপাড়া গ্রামের কৃষক মোস্তাক হাওলাদার, আব্দুর রহিম, মিজানুর রহমানসহ একাধিক কৃষক জানান, সরকারীভাবে দেয়া বীজগুলো কিছুটা নিম্নমানের হওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। পরবর্তীতে বীজ ক্রয় করে চাষ করায় এখন তাদের ক্ষেতে ভালো ফলন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.জে এইচ খান লেলীন বলেন, সূর্যমুখী ফুলের তেল স্বাস্থ্যসম্মত ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অত্যান্ত কার্যকর।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ জানান, কৃষকরা সূর্যমুখী চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছে। গত বছর ৪৯২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হলেও এবছর তা বেড়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় ১৮’শ প্রত্যেক কৃষককে ১ কেজি করে সূর্যমুখীর বিজ ও পর্যাপ্ত পরিমান সার দেয়া হয়েছে। তবে আগামীতে ১ হাজার হেক্টর জমি এ চাষাবাদের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।