২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১১:১৯
শিরোনাম:

সেই মোতালেবের পেট থেকে বের হলো আরও ৮ কলম!

সেই মোতালেবের পেট থেকে বের হলো আরও ৮ কলম!হাসপাতালের বেডে মোতালেব, ইনসাটে মোতালেবের পেট থেকে বের করে আনা আট কলম। কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ছাড়াই আরও আটটি কলম বের করা হয়েছে সেই মানসিক প্রতিবন্ধী আব্দুল মোতালেবের পেট থেকে।

সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার পেটে অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে কলমগুলো বের করে আনেন চিকিৎসকরা।

এ নিয়ে দুই দফায় অস্ত্রোপচার ছাড়াই মোট ২৩টি কলম বের করা হলো ওই রোগীর পেট থেকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ওই রোগীর পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হয়।

মানসিক রোগীর পেটে ১৫ কলম!

মেডিকেল সাইন্সের ইতিহাসে বিনা অস্ত্রোপচারে রোগীর পেট থেকে এতগুলো কলম বের করার ঘটনা এটিই প্রথম বলে দাবি ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের।

ওই রোগী সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খুকনি আটার দাগ গ্রামের বাসিন্দা। মোতালেব ৪-৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে এসব কলম আস্ত গিলে খেয়েছেন বলে চিকিৎসকদের ধারণা।

ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় অ্যান্ডোসকপির মাধ্যমে আরও ৮টি কলম বের করা হয়েছে। তার পেটে আর কলম নেই। এখন রোগী সুস্থ আছেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পেটে ব্যথায় ভুগতে থাকা মোতালেবের রোগ নির্ণয় করা যাচ্ছিল না। আমাদের এখানে ভর্তি হওয়ার পর অ্যান্ডোসকপি করে পাকস্থলীতে অনেকগুলো কলম দেখতে পাই। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও আমরা কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নিই। এখানে রক্তক্ষরণের শঙ্কা ছিল, ইনজুরি হওয়ার ভয় ছিল। বৃহস্পতিবার তিন ঘণ্টা অ্যান্ডোসকপির মাধ্যমে একটি করে ধরে ১৫টি কলম বের করা হয়। ভেতরে আরও আটটি কলম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই। আজ আবারও অ্যান্ডোসকপি করে আটটি কলম বের করা হয়। মেডিকেল সাইন্সের ইতিহাসে পেটের মধ্যে এতগুলো কলম বের করার ঘটনা এটিই প্রথম। সম্ভবত আমরাই প্রথম এই সাফল্যের কাজটি করতে পেরেছি।

মোতালেবের মা লাইলী বেগম বলেন, এক বছর ধরে আমার ছেলের পেটের ব্যথায় ভুগছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করার পরও সে সুস্থ হয়নি। ১৫ দিন আগে সমস্যা আরও বাড়ে তার। তখন সে খেতে পারতো না, খালি বমি করতো। এ কারণে তাকে এ হাসপাতালে আনা হয়। এখানে আনার পর তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেটের মধ্য থেকে কলমগুলো বের করে এনেছেন চিকিৎসকরা।

তিনি আরও বলেন, ১২ বছর ধরে আমার ছেলে মানসিক রোগী। তাকে মানসিক চিকিৎসকও দেখানো হয়েছে। সে কলমগুলো অজ্ঞান কারণেই খেয়েছে।

ওই হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস মোহাম্মদ খায়রুল আতাতুর্ক বলেন, আমাদের এখানে উন্নতমানের অত্যাধুনিক সব ধরনের মেশিন আছে। আটটি অ্যান্ডোসকপি মেশিন আছে। এর সবগুলো অত্যাধুনিক। প্রতি বিভাগে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। যেগুলো চালু আছে অথবা অল্প দিনের মধ্যেই চালু হবে।

উত্তরাঞ্চলের জনগণের জন্য আশার কেন্দ্র হবে হাসপাতালটি বলে-যোগ করেন তিনি।