২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:০১
শিরোনাম:

বংশালে সন্ত্রাসীদের শিকার একটি পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বংশালের মালিটোলা এলাকায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সাইদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলা ও হুমকিতে পৈত্রিক বাড়ি হারাতে বসেছে একটি পরিবার। তারা ওই বাড়ির দখল ছাড়তে না চাওয়ায় তাদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারপিট ও জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দিলেও তা র্অজ্ঞাত কারণে নথিভুক্ত হয়নি। এ নিয়ে ওই পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাদের এ বাড়িতে নিরাপদে বসবাস করা ও সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলা ও হুমকি থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন প্রয়োগকারি সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার পাপিয়া সুলতানা টুম্পা লিখিত বক্তব্যে জানান, তার বাবা আফজাল হোসেন নান্টু মোল্লা ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী পারভিন বেগমের গর্ভে আমার বড় বোন সাজিয়া সুলতানা বিনু, বড় ভাই তুহিন হোসেন, ছোট ভাই পারভেজ আহমেদ রাজু ও তিনি (পাপিয়া)। বাবার প্রথম স্ত্রী মৃত শাকিলা বেগমের গর্ভে সৎ ভাই সমসের সালাউদ্দিন হারুন, সৎ বোন বিলকিস সুলতানা মিনুকে ওয়ারিশ রাখিয়া যান। বাবার মৃত্যুর পরও চার ভাই বোন এবং মা পারভিন বেগম মালিটোলার বাসায় বসবাস করে আসছেন। বাবার মৃত্যুকালে ১০/১৫ টি বাড়ি ও বিভিন্ন ব্যাংকে আনুমানিক ৫/৬ কোটি টাকা রেখে যান। কিন্তু দ্বিতীয় পক্ষের ভাই বোন সবাই বাবার মৃত্যুর সময় চাচা মোহাম্মদ আলী ময়না ও সৎ ভাই সমসের সালাউদ্দিন হারুন মা পারভিন বেগমকে মারধর করে গুরুত্বর আহত করে। তারা বাবার নামের সম্পত্তির কাগজপত্র, মায়ের কাবিননামা এবং বাবার ব্যাংকিং কাগজপত্র আলমারি ভেঙ্গে চুরি করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতে বিচার চাইলে কোন প্রকার বিচার পাননি তারা। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ধরনা ধরেও কোনো সুরাহা হয়নি।
পাপিয়া আরো বলেন, তাদের ১০/১৫ টি বাড়ি থেকে প্রতিমাসে ৩০ লাখ টাকা ভাড়া তোলা হয়। ওই টাকা থেকে বাবার ম্যানেজার গোলাপ মিয়া আমাদের পরিবারকে সংসার চালানো বাবদ যে টাকা প্রদান করেন তা দিয়ে আমাদের সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে পড়ায় আমার সন্ত্রাসী চাচা এবং সৎ ভাই বোনকে আমাদের ওয়ারিশী অংশ বন্টন করে দিতে অনুরোধ করলে তারা নানা তালবাহানা করতে থাকে।

তিনি আরো বলেন, বাবার ব্যাংকের টাকার জন্য মা পারভীন বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করলে বৈধ ওয়ারিশের বিষয় প্রমান হয়। কিন্তু চাচা আফজাল হোসেন নান্টু মোল্লা ওয়ারিশ অস্বীকার করেন। আমাদের ওয়ারিশ না দেওয়ার জন্য ৯০ এবং ৯৫ বাড়ি দখল করার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সাঈদকে ৯০ নম্বর বাড়ির ৩য় তলায় অফিস করে দেন। ২০২০ সালের ১১ নভেম্ভর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে অবৈধভাবে ২০/২৫ জন লোক নিয়ে বাড়ির গেট, গিল ভেঙ্গে ফেলে। এসময় আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে তলপেটে লাথি মারে। এক পর্যায়ে আমাকে ২য় তলা থেকে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয় এবং আমার দুই ভাইকে অস্ত্র দেখাইয়া গুলি করে পেটের নাড়ি ভুড়ি বাহির করে দেয়ার হুমকি দেয়। আমার ভাই তুহিনকে বড় দিয়ে আঘাত করে ও আমার ভাবীকে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয় এবং শ্লীলতাহানি করে। সর্বশেষ গত ৩১ মে বিকেলে চাচা ময়না ও তার ছেলে ও তাদের সহযোগীরা আমার ডান চোখে আঘাত করলে রক্তক্ষণণ শুরু হয়। এরপরও তারা আমার ডান হাত ভেঙ্গে দেয় ও বাম হাতে কাচ ভাঙ্গা ঢুকিয়ে দেয়। আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার মাড়ির দাত ফেলে দেয়। এই বিষয়ে আমি বংশাল থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানায় মামলা না নিয়ে আমাকে বের করে দেন। পরে আমি আদালতে মামলা করি। সন্ত্রাসী মোহাম্মদ আলী ময়না আগে থেকেই সন্ত্রাসী কার্যাকলাপে জড়িত। বাবার সম্পত্তির বৈধ ওয়ারিশ হওয়া সত্তে¡ও আমার সৎ ভাই-বোন, সন্ত্রাসী চাচা ও এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে আমার বৈধ অধিকার আদায় করতে পারছি না। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।