২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৩৪
শিরোনাম:

নওগাঁ বদলগাছীর বিলাশবাড়ী স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদা দাবী ও হয়রানির অভিযোগ

মোঃ ফারুক হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

 নওগাঁর বদলগাছীতে এক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদা দাবী ও হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের বিলাশবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাম্মী আকতার বর্ষা’র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও বিভিন্নভাবে হয়রানির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগটি করেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আফতাব হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ওই বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য স্লিপ প্রকল্প, রুটিন মেরামত, প্রাক-প্রাথমিক ও ওয়াস ব্লক মেরামত বাবদ ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। সরকারি বিধি মতে প্রতিটি বরাদ্দের জন্য বিদ্যালয় কর্তপক্ষ বিল ভাউচার ও কাজের প্রাক্কলন তৈরী করে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরের পর উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা করতে হয়।

প্রধান শিক্ষক আফতাব হোসেন বলেন, বরাদ্দকৃত প্রাপ্ত অর্থ চলতি অর্থ বছরেই ব্যয় করে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট থেকে প্রত্যয়ন নিতে হবে জন্য বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর করার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তিনি স্বাক্ষর না করে ৩মাস যাবত সময়ক্ষেপণ ও টালবাহানা করেন। উক্ত টাকার কাজ এই অর্থ বছরে না করলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জবাবদিহি করতে হবে জানালে সভাপতি শাম্মী আকতার বর্ষা বলেন, ওই চেক স্বাক্ষর করে আমাকে দেন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে আমি স্কুলের কাজ করবো। আর না হলে নগদ ২০ হাজার টাকা দিলে আমি চেকে স্বাক্ষর দিবো। তা না হলে আমি চেকে স্বাক্ষর দিবো না। আমি নগদ বিশ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সভাপতি আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হেনস্তা করার হুমকি দেন। শুধু তাই নয় সভাপতি আরও বলেন, মাননীয় এমপি মহোদয় তার নাকি কাছের লোক ইচ্ছে করলে আমাকে বিভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে দিবেন বলেও হুমকি দেন। বর্তমানে আমি অসহায় এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আমি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে জানিয়েও কোনও সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না জন্য এর প্রতিকার চেয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। উল্লেখ্য গত বছরও সভাপতি শাম্মী আকতার একই সমস্যা সৃষ্টি করেছিলো। পরবর্তীতে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে তা সমাধান করা হয়েছিলো।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি শাম্মী আকতার বর্ষা’র সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি, চেকে স্বাক্ষর এবং হয়রানির বিষয়টি বার বার কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি প্রমাণ করতে পারলে আমি পদত্যাগ করে চলে যাব। আর অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে তিনি চাকুরী ছেড়ে চলে যাবেন কিনা এমন প্রশ্ন করেন এই প্রতিবেদকের কাছে।

এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফ এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমি ১৪ দিনের প্রশিক্ষণে আছি। তবে বিষয়টি আমি শিক্ষা অফিসার মহোদয় মারফত জেনেছি। বিষয়টি এখনও সমাধান হয়নি তা আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেন, তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে সমস্যা হয়েছে। অর্থ বছর শেষ হলেও বিদ্যালয়ের কাজ হলো না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ না হলে সরকারি টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিয়ে দিবো। কাজ না করে সরকারি কোষাগারে টাকা ফেরত যাবে তাতে আপনাদের কোনও দায়-দায়িত্ব আছে কিনা অপর একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে কাজ না করলে আমি কি করবো? তবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি ।

উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম খান লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যটি সমাধান করা হবে।