২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৮:৩৮
শিরোনাম:

৫ হাজার কিমি পাড়ি দেওয়া প্রেমিকাকে খুন করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি!

সঞ্চয় বিশ্বাস: প্রেমের টানে ৫০০০ কি.মি. পাড়ি দিয়ে প্রেমিকের কাছে এসেছেন মেক্সিকোর প্রেমিকা। আর সেই প্রেমিকাকে খুন করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকের বিরুদ্ধে। শুধু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দেওয়াই নয়, অভিযোগ, প্রমাণ লোপাটের জন্য প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে সমুদ্রের জলে ভাসিয়েও দিয়েছেন প্রেমিক। আনন্দবাজার

শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তখনই প্রায় একই রকম একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এল। এ ক্ষেত্রে প্রেমিকাকে খুন করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকের বিরুদ্ধে।

জানা যায় , ডেটিং অ্যাপে তাঁর পরিচয় হয়েছিল পেরুর বাসিন্দা হুয়ান পাবলোর সঙ্গে। তাঁদের দু’জনের মধ্যে সেই সম্পর্ক অনেক দূর গড়ায়। প্রেমিকার নাম ব্লাঙ্কা আরেলানো তার বয়স ৫১। তারা সংসার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যদের কাছে তাঁর এই সম্পর্কের কথাও জানিয়েছিলেন ব্লাঙ্কা। তাঁরা এই সম্পর্কে সম্মতিও দিয়েছিলো।

পাবলোওকে নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখেন ব্লাঙ্কা। আর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে মেক্সিকো থেকে ৫০০০ কিলোমিটার উজিয়ে ব্লাঙ্কা পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রেমিকের কাছে।

পুলিশ আরও জানান, পেরুতে যাওয়ার আগে ব্লাঙ্কা তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি কয়েক দিনের জন্য পেরুর রাজধানী লিমায় যাচ্ছেন। ডেটিং অ্যাপে যে মানুষটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তাঁর সঙ্গে কয়েক দিন কাটিয়ে আবার ফিরে আসবেন।

ব্লাঙ্কা হুয়াচো পৌঁছে ভাইঝি কার্লা আরেলানোকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে ভালই দিন কাটছে। কিন্তু সেটাই ছিল তাঁর শেষ ফোন। বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর ব্লাঙ্কার কোনও ফোন বা উত্তর না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এর পর ব্লাঙ্কার সঙ্গে বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।

৭ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ব্লাঙ্কা। ১২ নভেম্বর তাঁর ভাইঝি কার্লা টুইট করেন, কোনও দিন ভাবিনি এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাইছি। আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটিকে খুঁজে পাচ্ছি না। পেরুতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন আমার কাকিমা ব্লাঙ্কা আরেলানো।

ব্লাঙ্কার পরিবার একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। পরে মেক্সিকোর পুলিশ যোগাযোগ করে পেরু পুলিশের সঙ্গে। ইতিমধ্যে হুয়াচোর সমুদ্রসৈকতে এক মহিলার কাটা হাত উদ্ধার হয়। আঙুলে একটি আংটি ছিল। সেখান থেকে মেক্সিকো পুলিশের কাছে ওই ছবি পাঠায় পেরু পুলিশ। শনাক্তকরণের জন্য থানায় ডাকা হয় ব্লাঙ্কার পরিবারের সদস্যদের।

আংটি দেখেই চিনতে পারেন এটিই ব্লাঙ্কারে হাত। কাটা হাত উদ্ধারের পর দিন আবারও ক্ষতবিক্ষত কাটা মুন্ডু এবং কিছু দেহাংশ ভেসে আসে হুয়াচো সৈকতে। পুলিশ সেগুলি উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মহিলার দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ উধাও ছিল। সেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কোথায় তা জানার জন্য পাবলোকে চাপ দেওয়া শুরু করে পুলিশ। জেরায় পাবলো স্বীকার করেছেন যে, ব্লাঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও চক্রের যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।