স্টাফ রিপোর্টার: গজারিয়ায় নারী উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ ভাতার চেক আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে লিপি নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর আক্তারের কাছে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগীরা।
লিপি আক্তার উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের কালীতলা ব্রিজ সংলগ্ন মাসুদ মিয়ার স্ত্রী বলে জানা গেছে। সে জাতীয় মহিলা সংস্থা হতে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এর প্রশিক্ষণার্থী ছিল ।
অভিযোগের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে জানা যায় গত (৭ জানুয়ারী) মঙ্গলবার বেলা ২ টায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধনে উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ ভাতা বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ প্রায় তিনশ প্রশিক্ষাণার্থী উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় মহিলা সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত এ প্রশিক্ষণে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ফ্যাশন ডিজাইন, ইন্টেরিয়র ডিজাইন এন্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ৩য় ও চতুর্থ এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এন্ড ই-কমার্স ট্রেডের ৫ম,৬ষ্ট ও ৭ম, ৮ম ব্যাচের ৩০০ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ৩০ লক্ষ টাকার প্রশিক্ষণ ভাতার চেক বিতরণ করা হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের প্রায় ৪০/৮০দিনের প্রতিদিন দেড় শ’ টাকা সম্মানী হারে প্রত্যেককে ছয় হাজার থেকে বারো হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
ভুক্তভোগী শাহিনুর আক্তার ফ্যাশন ডিজাইন, রাজিয়া সুলতানা ও রাবেয়া আক্তার ক্যাটারিং ট্রেড থেকে প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে ভাতার চেক গ্রহণ করেন। ভুক্তভোগীরা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের শ্রীনগর, চরপাথালিয়া, লক্ষ্মীপুরা কয়েকটি গ্রামে প্রশিক্ষণার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রায় ৫০ জনের নিকট হতে ভাতার চেক নিয়ে নেন লিপি আক্তার। এবং বলে তোমরা তো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করো নাই এই টাকা হতে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পাবা বাকি টাকা অফিসের চারজনকে দিতে হবে নতুবা এই টাকা সরকারের ঘরে ফেরত যাবে।
এই কথা বলার পর প্রশিক্ষনার্থীরা সেই ভাতার চেক লিপি আক্তারের নিকট তুলে দেন। লিপি আক্তার বলেন দুয়েক দিনের মধ্যে তোমাদের টাকা আমি পৌঁছে দেব। নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা লিপির সাথে যোগাযোগ করলে টাকা ফেরত না পাওয়ায় অনিয়মের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
লিপি আক্তারের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ঘটনার সত্যতায় বলেন আমি চেক নিয়েছি ।তারা এ বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি কেন করল। ওরা তো কোন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নাই শুধু কাগজে-কলমে ওদের নাম ছিল।
চেক অনিয়মের বিষয়ে জাতীয় মহিলা সংস্থা গজারিয়া শাখার কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান আমার অফিসের এই ভাতার চেকের অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলে তাহাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কুহিনুর আক্তার বলেন বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তার মাধ্যমে উক্ত অনিয়মের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত জানান, চেক ফেরত নেওয়ার বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি তবে বিষয়টি আমি গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করতেছি যা তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।