২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:২৬
শিরোনাম:

আবরার হত্যার দ্রুত বিচার চান ৬ মন্ত্রী

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের ছয় মন্ত্রী। তারা বলেছেন দ্রুত সময়ে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে। সূত্র: প্রথম আলো, যুগান্তর ও বাংলানিউজ

ওবায়দুল কাদের: দলীয় অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে আবারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলীয় পরিচয়ে কেউ অপকর্ম করলে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি। বললেন, আবরার হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। ৮ অক্টোবর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কাদের বলেন, অল্প কয়েকজনের অপরাধের জন্য পুরো সংগঠন দায়ী হবে না। অপরাধীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। আমরা কথার কথা বলছি না। কাজে তা প্রমাণ করার চেষ্টা করছি। আওয়ামী লীগে কোন অপরাধীর ঠাঁই হবে না। আমরা অপরাধ সমর্থন করি না, করব না।

আসাদুজ্জামান খান কামাল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বুয়েট প্রশাসনের আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার ছিলো। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না ডাক দিলে পুলিশ ভেতরে ঢোকে না। এ জায়গাটিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার ছিলো। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয় তো এ ধরনের ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। ভবিষ্যতে প্রশাসন ছাত্রদের প্রতি আরো নজর দেবে, দায়িত্ববান হবে বলে মনে করি।
আবরার হত্যাকাণ্ড যারা সংঘটিত করেছিল এদের প্রায় সবাইকে ধরা হয়েছে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ জন ১৬৪ করেছে (স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন)। আমি আগেও বলেছি আজও বলছি, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।

আনিসুল হক : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির সকল ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যেই জড়িত থাকুক না কেন এবং তাদের পরিচয় যা-ই হোক না কেন সকলকে বিচারের আওতায় আনা হবে এবং ন্যায় বিচারের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শেষ করা হবে। বৃহস্পতিবার নোয়াখালীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ : বুয়েটের হত্যাকাণ্ড ন্যক্কারজনক অবিহিত করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ৯ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা এ ঘটনায় জড়িত তারা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় এ জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। দেশে অবশ্যই ভিন্নমত থাকবে। ভিন্নমত ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক সমাজ হতে পারে না। ভিন্নমতের জবাব আক্রমণ করে হয় না। এটি আমাদের দল ও সরকার কেউই সমর্থন করে না।

ডা. দীপু মনি : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আগে থেকে যদি শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও র্যাগিং বন্ধ করা হতো তা হলে আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো বর্বরোচিত ঘটনা ঘটত না। ১০ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘ গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট ২০১৯’ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, লজ্জিত। একজন মেধাবীর এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। হত্যায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তাদের দ্রুত ধরা হয়েছে। অবশ্যই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।

শ ম রেজাউল করিম : হত্যাকারীরা যে লীগের হোক না কেন অপরাধ যিনি করবেন আইনের আওতায় তাকে আসতেই হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ৮ অক্টোবর সাভারের আমিনবাজারের মধুমতি মডেল টাউন এলাকার করিম পল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিষ্ঠুরতা। সরকারি পর্যায় থেকে অ্যাকশনটা খুব পরিচ্ছন্নভাবে দেখা গেছে। ঘাতকদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে, গ্রেফতার চলছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছে ১৪ দল। ১১ অক্টোবর বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্য আরবার হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।

৬ অক্টোবর রাতে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সোমবার ভোরে শের-ই-বাংলা হলের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় আবরারের নিথর দেহ পাওয়া যায়। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল।