সোমবার দুপুরে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বিএসএমএমইউ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা.এ কে মাহবুবুল হক বলেন, আমরা এতোদিন একটি বিষয় বলতে চাইনি কিন্তু বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এমন কিছু সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে যে কারণে এখন বলতে হচ্ছে, আমাদের অফিস টাইম সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা ৩০ পর্যন্ত। অধ্যাপকরা রাউন্ডে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গেলে সব সময় দেখার সুযোগ পান না। উনার কাছ থেকে পূর্ব অনুমতি নিতে হয়। বেশিরভাগ সময়ই বেলা দেড়টার পর তিনি সময় দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে নির্ধারিত সময়ে উনার দেখা পাওয়া যায় না। অনেক সময় আমাদের বোর্ডের চিকিৎসকরা বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও উনার সাথে দেখা করার সুযোগ পাননি। আর্থাইটিস স্থিতিশীল অবস্থা কোনভাবেই অবনতি ঘটেনি। কোন কোন ক্ষেত্রে অবস্থার উন্নতিও হয়েছে।
তিনি বলেন, গত সাত মাস আগে তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও বাতজ্বরজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন।এখানে চিকিৎসায় বেশীরভাগ অসুখের উন্নতি হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।বেগম খালেদা জিয়ার বাতজ্বরের আধুনিক চিকিৎসার শুরু করার জন্য এক ধরনের ভ্যাকসিন নেয়া প্রয়োজন, কিন্তু তিনি ভ্যাকসিন নিতে রাজি হচ্ছেন না। তিনি জানিয়েছেন, পরিবারের সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে আমাদের জানাবেন। তিনি আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রধান জিলন মিয়া সরকার বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা উন্নতির জন্য আমরা তাকে তিনটা ভ্যাকসিন দিতে চাচ্ছি ইনফ্লুয়েনজা, নিউমোনিয়া, ভাইরাস জনীত। কিন্তু খালেদা জিয়া তা নিতে চাচ্ছেন না। তার পরিবারের পরামর্শের কারণে তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত উপচার্য অধ্যাপক ডা. শাহানা রহমান, উপ উপচার্য প্রশাসন অধ্যাপক ডা.রফিকুল আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা.এ বি এম আব্দুল হান্নান, মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. জিলন মিয়া সরকার, ডায়বেটিস ও হরমোন বিভাগের চেয়ারম্যান ডা.ফরিদ উদ্দিন।
সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার স্বজনদের সাক্ষাৎ করেন। পরে গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না এবং তার যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না। একই অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তার উন্নত চিকিৎসার দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ই ফেব্রুয়ারি একটি দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি হন বেগম খালেদা জিয়া।চলতি বছরের পহেলা এপ্রিল তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।