ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) মামাকে দেখতে এসে আইনজীবীর সহকারীর (মুহুরি) হাতে মার খেলেন ভাগনে। ভুক্তভোগীর নাম বেলাল হোসেন। তার স্ত্রীও এ সময় আহত হন। তাদের কাছ থেকে মুহুরি ও তার লোকজন ৬০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও একটা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন বেলাল।
আজ (রোববার) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। বেলাল হোসেনের মামা মনোয়ার আলীকে একটি সিআর মামলায় গত রাতে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে দেখার জন্য ভাগনে বেলাল হোসেন, তার স্ত্রী ওয়াহিদা বেগম ও মামি নাছিমা বেগম আদালতে আসেন। এ সময় মুহুরি মাসুদ দলবল নিয়ে তাদের মারধর করেন। মুহুরি মাসুদ মারামারির সময় নিজেকে ঢাকা বারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আদালত চত্বরে বেলাল হোসেনকে মুহুরি মাসুদের লোকজন বেদম পিটুনি দিচ্ছিল। আদালতের পুলিশ তাদের ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। বেলালকে পুলিশ ঘিরে রাখে। এর মধ্যেও তাকে পেটানো হচ্ছিল। পুলিশকেও পাত্তা দেয়নি মুহুরির লোকজন। ১৫ মিনিটের বেশি চলে এ মারধর। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মাসুদ এ সময় আইনজীবীর সহকারীর (মুহুরি) পরিচয়পত্র পকেট থেকে বের করে নিজেকে ঢাকা বারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন।
বেলাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত রাতে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকা থেকে আমার মামা মনোয়ার হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। রোববার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আজ আদালতে তার জামিন শুনানি ছিল। মামা আমাকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে আদালতে আসতে বলেন। তার কথা মতো আমি, আমার স্ত্রী ও মামি আদালতে উপস্থিত হই। মুহুরি মাসুদ বাদীপক্ষের লোক। সে আমার পকেটে টাকা দেখে আমার স্ত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে সে ও তার লোকজন আমার পকেট থেকে ৬০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা আমাদের মারতে থাকে। আমার স্ত্রীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। আমার স্ত্রী ও মামিকে তারা মারতে থেকে। মারামারি ঠেকাতে আসা লোকজনকেও তারা মারতে থাকে। আমি এখন কোতোয়ালি থানায় যাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
বেলালের স্ত্রী ওয়াহিদ হাসান বলেন, মুহুরি মাসুদ আমার শরীরে হাত দেয়। আমার স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে মারধর করে। তারা আমার গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
অন্যদিকে মুহুরি মাসুদ বলেন, ‘আমি ঢাকা বারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। আমরা বাদীপক্ষের আইনজীবী। আসামির জামিন না পেয়ে তারা আমার গায়ে হাত তুলেছে।’
মারামারির সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক লাল মিয়া। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রচি বলেন, মুহুরি কীভাবে কার্যকরী পরিষদের সদস্য হয়? সে তো আইনজীবী নয়। তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।