রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ একজন সজ্জন মানুষ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। সচালাপী ও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা এই মানুষটি একেবারেই নিরহঙ্কারী। যেখানে যান আলাপচারিতায় মেতে উঠেন, হাস্যরসও করেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি বলেন, ‘রাজশাহী আসছি, কয়েকদিন পরেই আম পাকার কথা। মনে হয় আইস্যা পড়তাছে। এখানে আমার বাবাজি আমাদের মেয়র সাব, আমার ভাতিজা লিটন এবং আমাদের প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও আছেন। বলে যাচ্ছি আর কি-আমের সিজনে যেন ভালা আম পাঠানো হয়। আম না পাঠাইলে কিন্তু খবর আছে। আম পাঠাইলে যেন আবার ফরমালিন বিষয়টি না থাকে। রাষ্ট্রপতির এমন রসিকতায় হাসির রোল পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে। সবাই হাততালি দিয়ে উঠেন। হাসতে থাকেন রাষ্ট্রপতি নিজেও।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাবর্তনে যোগ দিয়ে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্মৃতিচারণ করে রাষ্ট্রপতি ও চ্যাঞ্চেলর মো. আবদুল হামিদ বলেন, শহীদ কামারুজ্জামান ভাই আমার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। তার ডাকনাম হেনা ছিলো। আমি হেনা ভাই বলেই ডাকতাম। একজনের বেডে আমরা দু’জন থাকতাম। হেনা ভাই একটু মোটা ছিলেন, আমি চিকন ছিলাম। মাঝে মাঝে ভাই একটু নড়লে আমি নিচে পড়ে যেতাম। তাছাড়া, তিনি এমন নাক ডাকতেন, ঘুমানোর উপায় ছিলো না।
পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় একবার এক শিশু তাকে চোর বলেছিলো, সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তখন এমএলএ। আমাকে ময়মনসিংহ থেকে প্রথমে কুষ্টিয়া জেলে পাঠায়। এরপর রাজশাহীতে আনা হবে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, আপনি তো পালাবেন না, তাছাড়া এমএলএ। তাই হাতকড়া না লাগিয়ে কোমরে দড়ি না বেঁধেই নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি উকিল হইনি, তবে উকিল হওয়ার পথে। মানে লেখাপড়া শেষের দিকে। আমি মনে মনে ভাবলাম, বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ কয়েদিদের মেরে ফেলেছে। আমি পালানোর চেষ্টা করেছি দাবি করে যদি রাস্তায় গুলি করে মেরে ফেলে, সে জন্য বললাম-না, আমাকে হাতকড়া লাগিয়েই নিয়ে যান। তারপর তারা আমার কোমরে দড়ি বেঁধে ফেরিতে তোলে।
ফেরিতে আসার পথে আমাকে দেখে ছোট্ট এক শিশু তার মাকে ধীরে ধীরে বলে-মা, দেখ চুর (চোর)। তার মা শিশুটিকে বলে চুপ কর। আমি পাশ থেকে শিশুর চোর ডাকটি শুনতে পাই। তখন তাকে বলি-তুমি চোর বল। চোররদেরই এইভাবে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যায়। কোনো অসুবিধা নেই। রাষ্ট্রপতির এমন মজায় সবাই আবারও হেঁসে উঠেন।
https://www.facebook.com/saruarz6/videos/505687306958305/