২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৯:৪০
শিরোনাম:

করোনা ভাইরাস বাগেরহাটে খুলছে দোকানপাট, বাড়ছে সংক্রমণ শঙ্কা

নইন আবু নাঈমঃ জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের নানামুখী উদ্যোগের কারনে বাগেরহাটে করোনা ভাইরাস বিস্তার লাভ করতে না পারলেও দোকানপাট খুলে দেয়ার পর থেকেই বাড়ছে সংক্রমনের শঙ্কা। ভিন্ন জেলা থেকে বাগেরহাটে এসে নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত ৬জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে বাগেরহাটে জনসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম। জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের এসব উদ্যোগ সর্বস্থরে প্রশংসিত হলেও কিছু দিন হলো সব উদ্যোগ যেন ভেস্তে যেতে বসেছে। করোনা সংক্রমণের ঝুকি এড়াতে প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হওয়ায় পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ মানুষ স্বাস্থ্য বিধি কোনো শর্তই মানছে না।

তবে ঈদকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালুর উদ্যোগ হিসেবে দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, এর ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুকি বাড়ছে বলে ধারণা জেলার অধিকাংশ মানুষের। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে গত ২৬ মার্চ থেকে জেলার দোকান মালিকরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে। খোলা রাখা হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধের দোকান। শুরুতে কঠোরতা এবং মানুষের সচেতনতা লক্ষ করা গেলেও সাধারন মানুষ এখন ঘর থেকে বের হচ্ছে। তার উপর গত ১০ মে থেকে খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট, ফলে হাটবাজারে বাড়ছে ভিড়। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়াবহ ঝুকির মধ্যে পরেছে জেলার অধিকাংশ মানুষ। তবে দোকান মালিকরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয় নিয়ে জীবিকার তাগিদে দোকান খুলতে হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন ভিড় বাড়লে সুরক্ষা মানা সম্ভব হবে না। সীমিত সময়ের জন্য দোকান খোলা থাকায় ক্রেতাদের তাড়াহুড়া থাকবে।

ফলে করোনা সংক্রমনের ঝুকি আরও বাড়বে। বাগেরহাট শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন সাংবাদিকদের জানান, সরকারের দেয়া সব শর্ত মেনে ব্যবসায়ীরা বেচাকেনা করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধের দোকান বাদে দীর্ঘ দেড় মাস জেলার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসায়ীরা কেনাবেচা করে যদি কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেন। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বাগেরহাট সাংবাদিকদের জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শর্ত মেনে ১০ মে থেকে জেলার দোকানপাট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। এখানকার দোকান মালিকদের সরকারের দেয়া শর্ত অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে দোকানগুলোতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনা করা, মুখে মাক্স, হ্যান্ড গেøাভস পরতে হবে।

সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা বানিজ্য করতে হবে। এছাড়া, সার্বিক তদারকির জন্য জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম মাঠে থাকবে। নির্দেশনার অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর বাগেরহাট জেলায় তা প্রতিরোধে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ নানা পদক্ষেপ নেয়। জনসমাগম রোধ, সচেতনতামূলক প্রচারণা, বহিরাগতদের ঠেকাতে সীমান্তে চেক পোস্ট বসায় প্রশাসন। যার কারনে এই জেলায় ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে। ৫ এপ্রিল থেকে জেলায় করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাগেরহাটে নারী ও শিশুসহ মোট ৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। তারা কেউই বাগেরহাটে বসে করোনায় আক্রান্ত হননি। সবাই জেলার বাইরে থেকে বাড়ীতে ফেরেন।