১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:৪৭
শিরোনাম:

সেশনজটের শঙ্কায় মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা

গত ৩১ মে মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় ফল প্রকাশিত হলেও এখনো একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এতে মুষড়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। ঘুরেফিরে সবার মনেই জাগছে সেশনজটের শঙ্কা।

ধানমন্ডি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ফাইভ পেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছেন লামইয়া তাবাস্সুম তুপা। করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বেচ্ছায় ঘরকুনো হয়েছেন। এমন চমক জাগানিয়া ফলাফল করেও তিনি খুশি হতে পারছেন না। খুশি নেই তার অভিভাবকও। কারণ ফল ঘোষণা হয়েছে ঠিকই কিন্তু কোথাও ভর্তি হতে পারছেন না।

তুপা বলেন, মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে সবে কলেজে ক্লাস শুরুতে উচ্ছাসটাই অন্যরকম। সে আনন্দ হয়তো আমাদের ভাগ্যে নেই। ভেবেছিলাম অনলাইনে ভর্তি হয়ে ভিডিও কলিংয়ে হয়তো ক্লাসও শুরু করতে পারবো, সেটিও হয়নি। মনে হচ্ছে আমার সেশনজটে পরতে যাচ্ছি। কি বলবো কিছুই বলার নেই।

অভিভাবকরা বলছেন, প্রথম বছরটা হয়তো পড়াই হবে না। সরাসরি দ্বাদশে ভর্তি হতে হবে। সেক্ষেত্রে পড়াশোনার চাপ থাকবে বেশি। এই চাপ পড়বে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এবং ক্যারিয়ারে। জানি না কি হবে! রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ঘুরে অন্তত ২০ জন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একটি সূত্র বলছে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম জুলাই মাসের মাঝামাঝি কিংবা শেষ দিকে শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরো আবেদন প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হবে অনলাইনে। এমনকি স্কুল ফি কিংবা ভর্তি ফি-ও জমা নেওয়া হবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে।

ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে কমপক্ষে ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। এবার ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার কোটা ছাড়া অন্য কোটা থাকছে না। তবে প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির শিক্ষার্থী, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এবং প্রবাসীর সন্তানদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ সুবিধা পেতে তাদের সনাতন পদ্ধতিতে সরাসরি শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করতে হবে। কলেজে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা এবং আবেদনকারীর অন্যান্য বিষয় যাচাই-বাছাই করে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে।

আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সাব কমিটি প্রধান মু. জিয়াউল হক বলেছেন, করোনার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। সময় ঠিক থাকলে এতোদিনে হয়তো ক্লাস শুরু হয়ে যেত। এখন সেটি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সময়ের ঘাটতি পূরণ করতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি, এবারের এসএসসি উত্তীর্ণরা যথা সময়েই এইচএসসিও শেষ করতে পারবেন। তাদের জন্য সেভাবেই পরিকল্পনাও সাজানো হচ্ছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের মন খারাপ করলে চলবে না। তাদেরকে পরিস্থিতি বুঝতে হবে। আমরা তাদেরকে কোন বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারি না। তাদের যে সময়টা চলে যাচ্ছে সেই ঘাটতি পূরণ করা হবে। এখন বরং তারা বাসায় বসে অধ্যয়ন করুক। মন খারাপ করে থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। শিক্ষার্থীরা থাকবে সদা প্রফুল্ল।