৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:৩৭
শিরোনাম:

ডা. সৈয়দা সামিনা মাহজাবিন : করোনা কালিন সময় হাতের যত্ন

প্রায় ১০০এরও বেশি দিন ঘরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এই সময়ে বারবার সাবান ব্যবহার করাই যেন একমাত্র উপায়। কিন্তু বেশি সাবান ব্যবহারের ফলে অনেকের হাতের ত্বকে দেখা দিতে পারে কিছু সমস্যা। অনেকের‍্ই হাতের ত্বকে দেখা দিচ্ছে সাদা সাদা ভাব, কারওবা হাত জ্বলছে, সঙ্গে অ্যালার্জি। এ ছাড়াও যাঁদের হাতে আগে থেকেই ছত্রাকজনিত সংক্রমণ (ফাঙ্গাল ইনফেকশন) আছে, তাঁরা বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুলে হাত বেশি চুলকাবে। অনেক ক্ষেত্রে চামড়া ফেটে রক্ত বের হতে পারে। আবার আঙুলের পাশে সংক্রমণ হয়ে পেকেও যেতে পারে। এসব সমস্যা যাঁদের হচ্ছে, তাঁদের জন্য স্কিন ডাঃ এর সাথে পরামর্শ করে চিকিৎসা নেয়া সব থেকে ভাল সমাধান। কিন্তু আশেপাশের পরিস্তিতে বাইরে গিয়ে অনেকেই ডাঃ দেখাতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে এই সময় ঘরে থাকা কিছু উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। যেগুলো হাতের ত্বককে সুস্থ রাখবে।

১) হাতেকে রুক্ষতার হাত থেকে বাচাতে:
এই সময় হাতের ত্বকের রুক্ষতা কমাতে ১ প্যাকেট হ্যান্ডওয়াশের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে হাতের ত্বকে রুক্ষতা আসবে না। অথবা হাত ধয়ার পরে হাতে ভেস্লিন অথবা লোটন ব্যবহার করতে পারেন। এতে রুক্ষতা কমবে।

২) চামড়া ওঠা দূর করতে:
সমপরিমাণ নারকেল তেল ও জলপাই তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে নিতে পারেন,   ১৫ থেকে ২০ মিনিট এই তেলে হাত ভিজিয়ে  হাতে মালিশ করতে পারেন।  এটি হাতের খসখসে ভাব ও চামড়া ওঠা দূর করে হাত রাখবে নরম। অনেকের বেশি সমস্যা হতে পারে হাতের চামরা উঠা নিয়ে সে ক্ষেত্রে দেরি না করে স্কিন  ডাঃ এর সাথে পরামর্শ করতে পারেন।

৩) ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে:
১ কাপ ক্রিম (আপনি যে ক্রিম ব্যবহার করেন), সাথে নারিকেল তেল, সাথে  গ্লিসারিন,  ভালোভাবে মিশিয়ে একটা বক্স এ রেখে দিতে পারেন।প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করতে পারেন এটি হাতের ত্বক নরম রাখতে সাহায্য করবে। এছারাও মেডিকেটেড ভালো লোটন অথবা ভেস্লিন ব্যবহার করতে পারেন।

৪) ঘরোয়া জীবাণুনাশক :
১ কাপ পুদিনাপাতা, ১ কাপ নিমপাতা, ১ কাপ তুলসীপাতার সঙ্গে পানি মিশিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে যে রস বের করে  হবে সেটার সাথে  ১ চা–চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে রেখে দিন। এটি খুব ভালো টোনার ও জীবাণুনাশক (অ্যান্টিসেপটিক) প্যাক হিসেবে কাজ করবে। হাত ধোয়ার পর এটি স্প্রে করে লাগিয়ে নিলে হাত বেশ নরম তো হবেই, পাশাপাশি জ্বালা করবে না আর জীবাণুও থাকবে না। চাইলে লেবু ও ব্যবহার  করতে পারেন হাত ধোয়ার সময়।এতে করে হাত পরিস্কার ও হবে আবার হাত নরম ও থাকবে।

চালের গুরা সাথে ময়দা মিশিয়ে একসাথে হাতে ব্যবহার করতে পারেন।এতে করে হাতের ময়লা কাটবে। এছারা মেডিকেটেড কিছু প্রোডাক্ট আছে সেটা ব্যবহার করতে পারেন।

৫) ডিটারজেন্টে এর দিকে খেয়াল করুন:
খুব কড়া ডিটারজেন্ট বা ডিশ ওয়াশ ব্যবহার করবেন না। এমন অনেক প্রডাক্ট পাওয়া যায়, যা পরিষ্কার করে, কিন্তু হাতের বেশি ক্ষতি করে না। সম্ভব হলে তেমন কোমল, হার্বাল ফর্মুলার প্রডাক্ট বেছে নিন যা আপনার হাত নরম রাখবে।

৬) গ্লাভস এর ব্যবহার:
বাসন মাজা বা কাপড় কাচার সময় হাতকে বাঁচিয়ে রাখুন কড়া কেমিক্যাল থেকে। প্রতিদিন ঘরের কাজ করার সময় হাতে গ্লাভস পরে নিলে ত্বক আর নখ সুরক্ষিত থাকবে। এবং এতে জীবানু থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে

৭) নিয়মিত হাতে ক্রিম মাখুন:
ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তার উপর প্রতিদিন দু’বেলা বাসন মাজা, রান্না করার মতো কাজ করতে হলে হাত ভীষণ শুকনো হয়ে যাবে। উপরের ত্বক কুঁচকে গিয়ে হাত খুব বয়স্কও দেখাতে শুরু করবে। এ পরিস্থিতি থেকে বাচার জন্য বারবার ক্রিম লাগানো। যতবার হাতে সাবান, ডিটারজেন্ট লাগাবেন, ততবার শুকনো কাপড়ে হাত মুছে ময়শ্চারাইজার বা হাইড্রেটিং ক্রিম লাগিয়ে নিন। সে ক্ষেত্রে স্কিন ডাঃএর সাথে পরামর্শ করে ক্রিম লাগাতে পারেন যে কোন ক্রিম টা আপনার স্কিন এর জন্য ভালো।

ঘরে থাকুন।
সুস্থ থাকুন।

ডা. সৈয়দা সামিনা মাহজাবিন
চর্ম ও যৌন বিভাগ।
কেন্দ্রিয় পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগ
ডা. ঝুমু খান লেজার মেডিকেল সেন্টার