মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এত বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এদিকে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের ১২ ট্রাক ইলিশ মাছ প্রবেশ করার পর উৎসবমুখল পরিবেশে নিলাম শুরু হয়। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মনে ঔজ্বল্যের ঝিলিক দেখা গেছে এমনটাই জানান স্থানীয় সাংবাতিক সুব্রত আচার্য। সময় টেলিভিশনে তিনি এ সংবাদ পরিবেশন করে বলেন, এককেজি ওজনের ইলিশ পাইকারী ১২’শ রুপি বিক্রি হচ্ছে যা খুচরা ১৬’শ রুপি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের কম ইলিশ ৭’শ থেকে ৯’শ রুপি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, চুক্তি অনুসারে আগাম না জানিয়ে ভারত এভাবে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করতে পারে না। কারণ তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক রয়েছে। এজন্য বন্ধের আগে ব্যবসায়ীদের জানানো উচিৎ ছিল।
বেনাপোলের ওপারের পেট্রাপোলে আটকা পড়ে পেঁয়াজ ভর্তি প্রায় ১৫০টি ট্রাক। একই অবস্থা ভোমরা বন্দরেও। সকাল থেকে ভোমরা বন্দর দিয়ে কোনো পেঁয়াজের গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। স্থানীয় ব্যবসায়ী জনি ইসলাম একই ধরনের তথ্য জানান।
বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোল রপ্তানিকারক সমিতির পক্ষে ব্যবসায়ি কার্তিক ঘোষ ইউএনবিকে বলেন, ‘পেঁয়াজ রপ্তানি কারক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৭৫০ ডলারের নীচে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না। সে কারণে অনেকগুলো গাড়ি বর্ডারে দাঁড়িয়ে আছে।’
বেনাপোলের পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, ‘ভারতের সাথে আমদানি বাণিজ্য শুরুর পর থেকে ২৫০ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ আমদানি হয়ে আসছে। ভারতের নাসিকে বন্যার কারণে সেখানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের রপ্তানিকারকরা স্থানীয় বাজার দর হিসাবে ৭৫০ ডলারের নীচে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না। এ কারণে পেঁয়াজের রপ্তানি সাময়িক বন্ধ রয়েছে।’
ভারতের বনগাঁ এলাকার পেঁয়াজ ব্যবসায়ি অনিল মজুমদার জানান, বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে তাদের আপত্তি নেই। বাজার দরে এলসি পেলে তারা পুনরায় রপ্তানি শুরু করবেন। সেক্ষেত্রে পুরনো যে সব এলসি দেয়া আছে সেগুলো ২৫০ মার্কিন ডলার সংশোধন করে সংশোধিত মূল্যে এবং নতুন এলসি ৭৫০ মার্কিন ডলার করা হলে পেঁয়াজের আমদানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, ভারত কোন ঘোষণা ছাড়াই মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। পারস্পারিক বাণিজ্যে সমঝোতার বিকল্প নেই। তারা রপ্তানি বন্ধ না করে পেঁয়াজের আমাদানিকারকদেরকে সময় বেঁধে দিতে পারতেন। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তটা নেয়া ঠিক হয়নি।
এদিকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধের খবরে নড়ে চড়ে বসেছে বেনাপোলের পেঁয়াজের আমদানিকারক ও পেঁয়াজ ব্যবসায়িরা। গতকাল সন্ধ্যার আগেই খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করতে শোনা গেছে।