১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:২৯
শিরোনাম:

রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫

মহামারীকালে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই কাউকে নিরাশ না করে পূর্বের পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করে সবাইকে পাস করিয়ে প্রকাশিত হয়েছে এইচএসি ও সমমানের ফলাফল। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ডিজিটালি ফল প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে একযোগে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণার উদ্বোধন করেন।

এর আগে, ১৯৭১ সালে পরীক্ষা ছাড়া সব শিক্ষার্থীকে পাস করানো হয়েছিল। এবার করোনাকালে সেই একই পথে হাঁটল সরকার।

পরীক্ষা ছাড়াই প্রকাশ করা এইচএসসির ফলাফলে রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এবার ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন; যা ২০১৯ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি। ওই বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার ২৮৬ জন এবং তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে ২৯ হাজার ২৬২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-প পেয়েছিলেন। শতকরা হিসেবে ২০২০ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোট পরীক্ষার্থীর ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর ২০১৯ সালে যা ছিল মোট পরীক্ষার্থীর ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এছাড়া, ২০১৯ সালে মোট পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ছিল ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

বিষয়টি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে পরীক্ষা ছাড়া অটোপাস পদ্ধতি নিয়ে অনেকরকম কথা বলার চেষ্টা করছেন। শিক্ষার্থীদের জীবনের কথা ভেবেই এই পদ্ধতিতে ফল দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিক্ত বা বিরূপ মন্তব্য করা থেকে সমালোচনাকারীদের বিরত থাকতে অনুরোধ করেন তিনি।

এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। গত বছরের ১ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করায় ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সরকার পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়নের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান শ্রেণির ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় অনেকেই সরকারের সমালোচনা করছেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি পরীক্ষা নেওয়ার ফলে কোনো শিক্ষার্থী যদি সংক্রমিত হয়, তার দায় কী সমালোচনাকারীরা নেবেন? নিশ্চয়ই নেবেন না। তখন তারা ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতেন। তারা শুধু অহেতুক সমালোচনাই করতে পারেন, কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী কার্যকর কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না।’

এক্ষেত্রে জেএসসির ফল থেকে ২৫ শতাংশ এবং এসএসসির ফল থেকে ৭৫ শতাংশ নিয়ে গড় করে এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরে ফেল করা শিক্ষার্থীরাও এবার পরীক্ষার্থী ছিল। তাদেরও পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পরীক্ষার্থীই পাশের মুখ দেখেছে।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) পরীক্ষা ছাড়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সংসদে পাস হওয়া তিনটি সংশোধিত আইনের গেজেট জারি করা হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তিনটি বিলে সম্মতি দেন। রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর বিল তিনটি আইনে পরিণত হয়।

কিন্তু আইনে পরীক্ষা না নিয়ে ফল প্রকাশ করা যাবে না- এমন নিয়ম থাকায় তা সংশোধনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। পরে, বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করে গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে আইন সংশোধন করতে হয়।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড (সংশোধন) আইন-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) আইন-২০২১’- এর গেজেট প্রকাশ করা হয়।