৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:৩৬
শিরোনাম:

সাংবাদিক মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা নিষ্পত্তির দাবি

সরিষাবাড়ী(জামালপুর )প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়িতে মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে উৎকন্ঠায় মানবেতর দিন পার করছেন সাংবাদিক মাসুদুর রহমান। বিষয়টি স্থানীয় সচেতন মহল ও সরিষাবাড়ির কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে নাড়া দিয়েছে । তারা অতি দ্রুত মাসুদুর রহমানকে সকল মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানান। মাসুদুর রহমান মুভি বাংলার টিভি ও দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকাতে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। এছাড়া তিনি তেজগাঁও কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব এবং অনলাইন এডিটরস কাউন্সীলের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরিষাবাড়ি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় মাসুদুর রহমান তিনটি মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে জেলার স্থানীয় দৈনিক আলোচিত জামালপুরের সরিষাবাড়ির প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন মাসুদুর রহমান। ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ‘সরিষাবাড়ীতে লক্ষাধিক টাকায় থানা থেকে মুক্তি পেল সড়ক দুর্ঘটনায় আটক চারজন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের দুই দিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর থানার এএসআই আনসার আলীর ফোনে বাড়ি থেকে বের হয়ে পৌর এলাকার ধানাটা ব্রিজে আসেন মাসুদুর রহমান। এরপর তাকে আটক করে থানায় এনে এসআই ঈমান আলী বাদী হয়ে একটি মাদক মামলা এবং একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করে আদালতে এবং পরে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। যার মামলা নং-২৪ ও ২৫ তারিখ ২৭-৯-২০১৮ ইং । সেই সময় ১৩ দিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।

এরপর ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর সরিষাবাড়ির বীরধানাটা বি.জে.সি দুর্গা ও কালি মন্দিরে বিক্ষুব্ধ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপর হামলা করে একদল যুবক। ঘটনার সময় সাংবাদিক মাসুদুর রহমান নিজ বাড়িতে অবস্থান করলেও তাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়। এরপর ১৮ নভেম্বর মহামান্য হাইকোর্টে তার পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ইসরাফিল হোসাইনের জামিনের আবেদনে বিচারপতি আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীম মাসুদুর রহমানের অ্যান্টিসিপেটরি জামিন চার সপ্তাহের জন্য মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ ১ বছর ৪ মাস পর মাদক মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় জামালপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের চতুর্থ আদালতের বিচারিক হাকিম সোলায়মান কবীর তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

বীর ধানাটা বি.জে.এম.সি শ্রী শ্রী দূর্গা ও কালী মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শ্রী মোহন লাল, সহসভাপতি শ্রী কার্তিক চৌহান, সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিজয় দাস স্বাক্ষরিত একটি লিখিত প্রত্যয়নপত্রে জানানো হয়, ‘গত ১৮ অক্টোবরের ২০১৮ সালে ওই পূজা মন্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাসুদুর রহমান, পিতা- মোজাম্মেল হক, সাং- ধানাটা, থানা- সরিষাবাড়ী, জেলা-জামালপুর-কে জড়িয়ে যে মামলা হয়েছে, তা সঠিক নয়। তার দ্বারা আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা পেয়ে থাকি।’ মাসুদুর রহমান একজন সৎ ও নির্ভিক সাংবাদিক বলে উল্লেখ করেন তারা।

তবে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পুলিশের উপর হামলা মামলায় জামিনে থেকে আইনী লড়াই করছেন মাসুদুর রহমান।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ি উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, সাংবাদিক মাসুদুর রহমান খুবই সাহসী একজন সাংবাদিক। তাকে দমিয়ে রাখতে এই মামলাগুলো করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। অতি দ্রুত সাংবাদিক মাসুদুর রহমানকে সকল মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানান তিনি।

এসব বিষয়ে সাংবাদিক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সত্য সংবাদ প্রকাশ করায় আমাকে তিনটি মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এখন আমার বেশিরভাগ সময় মামলাজনিত কারলে ব্যয় করতে হয়। এতে আমি মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তবুও আমি সবসময় সত্য সংবাদ প্রকাশ করে যাবো। তবে আর কোনো সাংবাদিক যেন এমনভাবে মিথ্যা মামলার শিকার না হয় সেই দাবি জানাই।’