১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:৪৭
শিরোনাম:

কারাগারে একজনের মৃত্যুর কারণে ওই আইন বাতিল করতে হবে : তথ্যমন্ত্রী

কারাগারে মোশতাকের মৃত্যু নিয়ে পানি ঘোলা করে লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ডিজিটাল আইনের ব্যাপারে তিনি বলেন, একজনের মৃত্যুর কারণে ওই আইন বাতিল করতে হবে? এটা তো আইনের দোষ না।

বুধবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এটিএম শামসুজ্জামানের শোক সভায় তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’ এই আইনে মোশতাক কারাগারে ছিলেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে। সেই সূত্র ধরে বলা হচ্ছে, এই আইন বাতিল করতে হবে। অন্য আইনে যারা কারাগারে যায়, সেই আইনে যদি কারাগারে তারও মৃত্যু হয়, তাহলে কি সে আইনগুলোও বাতিল করতে হবে? সে প্রশ্নটাও এসে যায়।

তিনি বলেন, এ আইন সাংবাদিককে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য, গৃহিণীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য, কৃষকের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। কারও চরিত্র হনন হলে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই আইন। অবশ্য এই আইনের অপপ্রয়োগ না হয়, সেজন্য আমরা সর্তক আছি। অপপ্রয়োগ হওয়া কাম্য নয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে নিয়ে প্রতিদিন মিডিয়া সরগরম। মিডিয়াকে সরগরম রাখছে একটি পক্ষ। প্রতিদিন প্রেসক্লাবের সামনে নানা ধরনের আয়োজন করা হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারা অভ্যন্তরে ৪ জাতীয় নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিলো। সেনাবাহিনীর বিপদগামী সদস্যরা সেখানে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলো। তখন সেনাপ্রধান ছিলো জিয়াউর রহমান। খন্দকার মোশতাকের নির্দেশে জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা হয়েছিলো। আজকে সেই কথা কেউ বলে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের পর কারাগারের অভ্যন্তরে বহু জনকে নির্যাতন করে হত্য করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে কারা অভ্যন্তরে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিলো, চট্টগ্রামের মৌলভী শহিদকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিলো। এরকম বহু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে কারাগারে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

‘দলাদলি করেছি, বিভক্ত হয়েছি, দেশটাকে গড়তে পারিনি’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি কাগজে দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব একটা কথা বলেছেন, ৫০ বছরে আমরা শুধু দলাদলি করেছি দেশ আগাইনি। আমি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলবো, আজকে যে দেশ এতদূর এগিয়ে গেছে, এটা অনুধাবন করতে পারলেন না। আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ, ঢাকা কলেজে পড়াতেন। আপনি একজন মার্জিত মানুষও বটে। যদিও বিএনপির পক্ষে কথা বলতে গিয়ে অহরহ মিথ্যা কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশ এতো এগিয়ে গেলো, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হলো, জাতিসংঘ সে সার্টিফিকেট দিয়েছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্ধৃত্তের দেশে রুপান্তরিত হলো, সাতশো ডলার মাথা পিছুর আয় থেকে ২০০৮ সালের, এখন ২০৬৯ ডলারে উন্নত হলো, ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমাদের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি। এবং রিজার্ভ ৪৪ মিলিয়ন ডলার। যেটি পাকিস্তানের তিন গুণ। এই তথ্যগুলো আপনার কাছে নেই। আমি খুব অবাক হচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি যদি দলাদলি আর নেতিবাচক রাজনীতি না করতো, বাংলাদেশ যে আজকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে, তারচেয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতো। যদি এ নেতিবাচক রাজনীতি না থাকতো। জঙ্গি আশ্রয়ী, স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রশ্রয় দেয়ার রাজনীতি যদি না হতো দেশ আরও বহু দূর এগিয়ে যেত। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আপনারা দলাদলি করেছেন। শুধু দলাদলি করেছেন তা নয়, প্রচন্ডভাবে নেতিবাচক রাজনীতিও করেছেন। আমাদের দেশে নেতিবাচক রাজনীতি, উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে অন্তরায়।