১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৫৯
শিরোনাম:

মায়ের সমানেই চাবুক দিয়ে মারতে মারতে এক ছাত্রকে মাদ্রাসায় নিয়ে গেছেন শিক্ষক

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাদ্রাসায় যেতে না চাওয়ায় বাড়িতে এসে মায়ের সমানেই চাবুক (ডিসের তার) দিয়ে মারতে মারতে এক ছাত্রকে (৮) মাদ্রাসায় নিয়ে গেছেন শিক্ষক। সেখানে নিয়েও তাকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার। গতকাল বুধবার ‍উপজেলার রায়পুরের পূর্বলাচ নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর রাতেই অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শিশুটির মা। পরে রায়পুর পৌরসভার নতুন বাজার এলাকার তাহজীবুল উন্মাহ ইসলামিক ইনস্টিটিউটে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক ফারুক পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ইয়াছিনের শরীরে চাবুকের আঘাতের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন মহলের মাঝে সমালোচনার ঝড় ওঠে। জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক ফারুকের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়, তবে মাদ্রাসার কেউই তার পরিপূর্ণ পরিচয় দিতে পারেননি।

অভিযোগ সূত্র জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশু ইয়াসিন রায়পুরের পূর্বলাচ নতুন বাজার এলাকার প্রবাসী কাজী আলী হায়দারের ছেলে। সে তাহজীবুল উন্মাহ ইসলামিক ইনস্টিটিউটে (মাদ্রাসা) দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। রহস্যজনক কারণে শিক্ষক ফারুক বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ইয়াসিনকে মাদ্রাসায় নিতে আসেন কিন্তু সে যেতে চায়নি।

ফলে হাতে থাকা চাবুক দিয়ে মা লাভলী বেগমের সামনেই মারতে মারতে ইয়াসিনকে টেনে-হিঁচড়ে মাদ্রাসায় নিয়ে যান ওই শিক্ষক। এতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। মাদ্রাসায় নিয়েও ইয়াসিনকে আরেক দফায় বেধরক মারেন তিনি। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় মা লাভলী বেগম ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ইয়াসিনের মা লাভলী বেগম অভিযোগ করেন, আমার সামনে থেকেই ইয়াসিনকে মারতে মারতে নিয়ে গেছেন ওই শিক্ষক। আমার তখন বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। আমি ওই শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই। মুঠোফোনে ইয়াসিনের বাবা প্রবাসী কাজী আলী হায়দার বলেন, পাষণ্ডের মতো ওই শিক্ষক আমার ছেলেকে মেরেছে। আমার ছেলের দোষ ছিল মাদ্রাসায় যেত না। ছেলেটির পুরো শরীরে প্রতিটি আঘাতের চিহ্ন ভেসে রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন বলেন, শিশুটিকে দেখার পর আমি নিজেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিসহ সকলের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই শিক্ষক কোথায় আছে জানাতে পারেননি তিনি।

অভিযোগের তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র ধর বলেন, অভিযোগ পেয়ে মাদরাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযুক্ত ফারুক ও অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।