১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:২৬
শিরোনাম:

নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রের অভিভাবক সেই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক বহিষ্কার

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের এক শিশু শিক্ষার্থীকে শিক্ষকের নির্মম নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মায়ের কাছে ছুটে যাওয়ায় মো. ইয়াসিন ফরহাদ (৮) নামে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে অমানবিকভাবে পিটিয়েছেন ওই শিক্ষক। এই ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামের মারকাজুল কোরআন ইসলামিক একাডেমিতে অভিযান চালিয়ে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মো. ইয়াহিয়াকে আটক করে পুলিশ।

তবে ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মা অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসাশিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে একটি লিখিত বক্তব্য দেয়ায় প্রশাসন এ ঘটনায় দোষী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নি।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে মায়ের পেছনে ছুটে যাওয়ার কারণে ওই শিক্ষক অমানুষিকভাবে হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন ফরহাদকে প্রহার করে। প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে শিক্ষার্থী ইয়াসিন ফরহাদকে দেখতে যায় তার মা পারভিন আক্তার। দেখা শেষে ফিরে আসার সময় ইয়াসিন ফরহাদ তার মায়ের পেছন পেছন ছুটে আসে। এ সময় হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মো. ইয়াহইয়া তাকে ধরে এনে বেদম প্রহার করে।

এদিকে ওই শিক্ষার্থীর ওপর শিক্ষকের অমানুষিকভাবে বেদম প্রহারের একটি ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তাকে নির্মমভাবে প্রহার করা হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই।

হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন রাত ১২.৪৫ মিনিটে আমাকে ফেইসবুক মেসেঞ্জারে একজন ছাত্র প্রহারের বিষয়টা জানান। ইতোমধ্যে বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।আমি তাৎক্ষণিক হাটহাজারি থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে যাই। বাচ্চাটির সাথে কথা বলি এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এমন সময় ছাত্রের বাবা মা এসে কান্নাকাটি করেন এবং শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান। তারা কিছুতেই মামলা করবেন না এবং আমাদেরকেও আইনগত ব্যবস্থা না নিতে অনুরোধ করেন। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্তে¡ও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। রাত ২ টা পর্যন্ত অভিভাবকরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো আমি আইনি ব্যবস্থা না নিই।

ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, কিছু খেলনা নিয়ে ছেলেটাকে দেখতে গিয়েছিলাম, ছেলেটার শরীরের ব্যথা নয় মনের ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেছি, শরীরের ব্যথা হয়তো নাপা খেলেই সেরে যাবে। ইয়াসিন দ্রুত ভুলে যাক এই এ ধরনের মনে দাগকাটা স্মৃতি।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক ইয়াহিয়াকে বহিষ্কার করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বুধবার ভোরেই তিনি মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেছেন।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ