১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:৫৪
শিরোনাম:

‘দাঁতের ওপর দাঁত দিয়ে ওদের মার সহ্য করি’

সবজি বিক্রেতা বাবার অভাবী সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য ঢাকায় গিয়ে জুটেছে চুরির অপবাদ। ঢাকায় ধানমন্ডির একটি প্রতিষ্ঠানে স্টোরকিপার হিসেবে যোগদানের পাঁচ দিনের মাথায় অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন কিশোর আশরাফুল। শরীরজুড়ে জখমের চিহ্ন নিয়ে গাইবান্ধার জেলা হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ওই কিশোর।

নির্যাতনের শিকার কিশোর আশরাফুল ইসলামের অভিযোগ, প্লাস দিয়ে আঙুল চেপে ধরে কাঠের বাটাম আর হকিস্টিক দিয়ে দেড়ঘণ্টা পেটানোর পর শরীরে গরম পানি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার স্বীকারোক্তি নেয়া হয়।

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চুরির অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার কিশোর আশরাফুলের এমন লোমহর্ষক বর্ণনার সময় বুক চাপড়িয়ে বিচার দাবি করেন আশরাফুলের বাবা সবজি বিক্রেতা আব্দুল আজিজ।

পরিবার পক্ষ থেকে জানায়, গত ৩১ মার্চ আশরাফুলকে ঢাকায় নিয়ে যায় প্রতিবেশী রাকিব। পহেলা এপ্রিল ধানমন্ডিতে কিডস ফ্যাশন শোতে স্টোরকিপার পদে চাকরি হয় রাকিবের মাধ্যমে। আট হাজার টাকা চুরির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির আব্বাস রহিত ও কর্মচারী মিজান তাকে বেদম মারপিট করে বলে অভিযোগ আশরাফুলের। আঘাতের পর আঘাতে অনেক অনুনয় করেও রক্ষা পায়নি কিশোরটি, ‘দাঁতের ওপর দিয়ে ওদের মার সহ্য করি’ বলেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আশরাফুল।

অভিযুক্ত মালিক রহিতকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইলে যোগাযোগ করলে মারপিটের কথা স্বীকার করেন রহিতের কর্মচারী মিজান। তিনি বলেন, চুরির অপরাধে তাকে মারধর করা হয়েছে।

পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে মারপিট করা হয় বলে দম্ভ করে সময় নিউজকে তিনি বলেন, আপনার কিছু করার থাকলে করেন।

আশরাফুল জানায়, গত ৫ এপ্রিল সোমবার রাতে টানা দেড়ঘণ্টা নির্যাতনের পর তার স্বাক্ষর ও ভিডিও স্বীকারোক্তি নেয়া হয়। আশরাফুলের বাবার কাছ থেকে বিকাশে টাকা নেয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয় তাকে। বুধবার সকালে ওই কিশোরকে ভর্তি করা হয় গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে।

বিষয়টি জানার পর গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মজিবর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল যেহেতু ধানমন্ডি থানা এলাকায়, তাই সেই থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।

নদী ভাঙনে সর্বহারা সবজি বিক্রেতা আশরাফুলের বাবা আব্দুল আজিজ সদরের মধ্য ফলিয়া গ্রামে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করেন।