১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১১:৩৬
শিরোনাম:

লেবানন থেকে খিলগাঁওয়ের বস্তিতেই ঠাঁই হলো শিশু জয়নবার

লেবাননে জন্ম নেওয়া ৭ বছরের শিশু জয়নবা। মা বাংলাদেশি ডলি বেগম প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিলেন দেশটিতে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মায়ের মৃত্যুর পর আশ্রয়হীন ছোট্ট শিশুটি বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্যে দেশে ফিরলেও তার ঠাঁই হয়েছে রাজধানীর একটি বস্তিতে।

অভিবাসন সংস্থা ও উন্নয়ন কর্মীরা জয়নবার দায়িত্ব নিতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

অবুঝ দুই চোখের বোবা চাহনি খুঁজে ফিরছে মা-বাবাকে। ৭ বছরের শিশু জয়নবা জন্মের পরপরই হারিয়েছে বাবাকে। লেবানন প্রবাসী বাংলাদেশি নারী শ্রমিক মা ডলি বেগমকে আঁকড়ে ধরে যখন বাঁচার চেষ্টা শিশুটির, আবারও বাধ সেধেছে নিয়তি। করোনা আক্রান্ত হয়ে লেবাননে মায়ের মৃত্যুর পর মাথার ওপরে থাকা ছাদটিও সরে যায় জয়নবার কাছে থেকে।

লেবাননের ডিপোর্টেশন ক্যাম্প। এরপর ট্রাভেল পাস দিয়ে এক বাংলাদেশির সঙ্গে জয়নবাকে দেশে পাঠায় দূতাবাস। এরপর থেকেই শিশু জয়নবার ঠাঁই হয়েছে খিলগাঁওয়ের বস্তির নোংরা ঘিঞ্জি পরিবেশে। যেখানে অপুষ্টি, নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী শিশু জয়নবার।

বাবা-মার স্নেহ বঞ্চিত হতভাগ্য শিশুটির সুন্দর শৈশব ও ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার অভিবাসন কর্মীদের।

ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগামের ইনফেরমেশন সার্ভিস সেন্টারের ম্যানেজার আল আমিন নয়ন সময় নিউজকে বলেন, আশা করি, রাষ্ট্র বা সরকার বা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় তার পাশে দাঁড়াবে। যাতে সে নিরাপদে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

শিশু জয়নবার বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ওয়েজ আনার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ‍মুশাররাত জেবীন জানান, জয়নবার বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই।

বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৫ বছরে ৪৮৭ প্রবাসী নারী শ্রমিকের মরদেহ কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরেছে। যাদের মধ্যে লেবানন থেকে আসে ৭১ জন। এর মধ্যে আত্মহত্যায় মৃত্যু হয়েছে ৮৬ জনের, দুর্ঘটনায় ৭১ জন, স্ট্রোকে ১৬৭ জন, খুন হয়েছেন ২ জন, স্বাভাবিক মৃত্যু ১১৫ জন, ও অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। অন্যদিকে, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন উঠে এসেছ, নারী প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার, নিয়মিত বেতন পান না ৪৪ শতাংশ নারী শ্রমিক।