৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:২৮
শিরোনাম:

থানায় যোগাযোগ না করায় চাঁদাবাজী মামলা হয়নি॥ চাঁদাবাজ দিয়ে পাল্টা অভিযোগ গ্রহণ—-

মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া সংবাদদাতা  :
৭দিনেও চাঁদাবাজীর মামলা আমলে না নিয়েও চাঁদাবাজের মূল আসামীর পক্ষে পাল্টা অভিযোগ গ্রহণ করেছেন গজারিয়া থানার ওসি রইছ উদ্দিন। কয়েকদিন পূর্বে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদা না পেয়ে নির্মানাধীন দেয়াল হামলা করে ভাংচুর করে। এ বিষয়ে থানায় (১১ মে) একটি লিখিত অভিযোগ দেয় নুরনবী। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে চাঁদাবাজ আব্দুস সাত্তারের পক্ষে আরেকটি অভিযোগ নেয় ১৬ মে। পরবর্তীতে সে এই বিষয়ে শালিস বৈঠকের প্রস্তাব দেয়। চাঁদাবাজ আব্দুস সাত্তারকে গ্রেফতার বা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে চাঁদাবাজ দিয়েই একটি অভিযোগ করালেন ওসি এমন অভিযোগ বাদীর।
স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ আব্দুস সাত্তার (৫৫) তার দলবলসহ অনধিকার প্রবেশ করে ঘরের পাকা দেয়াল ভাংচুর করে ১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ সময় আরো ৩লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে তারা। অপরদিকে মামলা এন্ট্রি না করে পাল্টা চাঁদাবাজদের পক্ষে অভিযোগ নেয়া হয় রোববার (১৬ মে)। পরবর্তীতে চাঁদাবাজদের পক্ষ নিয়ে ওসি রইছ উদ্দিন থানায় শালিস বৈঠকের প্রস্তাব দেয় নুরনবী ও জায়গার মালিককে।  এর পূর্বেও এই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গ্রুপটি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন বারে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ কারী মো: নুর নবী (৫২) জানান, পুরান বাউশিয়ার চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী মো: আব্দুস সাত্তার (৫৫) সার সাঙ্গপাঙ্গসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৬ জন ঘটনাস্থলে এসে ৩লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভাংচুর করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। ইতিপূর্বে এই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গ্রুপটি জমির মালিক কামরুল ইসলাম ও মো: মহসিন মিয়ার কাছ থেকে ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করে ৭০হাজার টাকা চাঁদা নেয়।  আমাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে থানার ওসি চাঁদাবাজ সাত্তারের পক্ষ নিয়ে মিমাংসার জন্য শালিস বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে। চাঁদাবাজদের নিয়ে কিসের শালিস বুঝলাম না।
অভিযোগকারী নুর নবী আরো জানান, লক্ষীপুর মৌজাস্থিত আর এস দাগ নং ৪২৮ এই ভূমিতে আমি ও আমার বেশ কয়েকজন পরিচিত লোক মিলিয়া ৭.৪৭ শতাংশ ভূমি ক্রয় করিয়া বালু ভরাট করিয়া ভোগ দখল করে ব্যবসা বানিজ্যের প্রস্তিতি নিচ্ছি। উল্লেখিত ভমির পিছনে আমার আরো ভূমি থাকায় সেখানে যাওয়ার জন্য যাতায়াতের রাস্তাও তৈরী করিয়াছি। উক্ত ভূমিতে কাজ করার সময় বিবাদীগণ আমাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা সহ আমাদের নিকট টাকা পয়সা দাবী করিয়া আসিতেছে। বাদী নুরনবী জানান, ওসির সাথে আমি সার্বক্ষনিক যোগযোগ রক্ষা করেছি কিন্তু সে আমার অভিযোগ আমলে না নিয়ে চাঁদাবাজ সাত্তারকে দিয়ে একটি পাল্টা অভিযোগ গ্রহণ করেছে।
জমির মালিক কামরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (১১ মে) সকাল ৯টার সময় ভূমিতে সন্ত্রাসী আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এসে ভূমিতে থাকা ঘরের পাকা দেয়াল ভাংচুর করিয়া আনুমানিক ১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। আমার আর এস দাগ নং ৪২৮ যাতায়াতের পথে সিমেন্টের খুটি ও বাশ দিয়া বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন আমিসহ আমার উক্ত জমির মালিক কামরুল ইসলাম (৫২) মো: মহসিন মিয়া (৫২) চাঁদাবাজ গ্রুপকে বাঁধা প্রদান করিলে বিবাদীগণ উত্তেজিত হইয়া আমাদের গালিগালাজ করিতে থাকে এবং উক্ত জমির মালিক কামরুল ইসলামের নিটক ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রইছ উদ্দিন জানান, দুটি অভিযোগই তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রকৃতপক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওসি বলেন, অভিযোগ দেওয়ার পরে তদন্ত হবে তদন্ত শেষে মামলা হবে। উভয় পক্ষ অভিযোগ পাওয়ায় বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বাদী পক্ষ নুরনবী আমার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি।
ওসি রইছ উদ্দিন আরো জানান, তার জানামতে আব্দুস সাত্তার চাঁদাবাজ না। ১১ মে অভিযোগ করার পরে বাদী কেন তার সাথে যোগাযোগ করেননি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই তিনি চাঁদাবাজ দিয়ে পাল্টা অভিযোগ দাঁড় করিয়েছেন।