হঠকারিতা করবেন না, দলের ভাই-বোনদের উদ্দেশে ফখরুল

বিএনপির নেতাকর্মীদের হঠকারিতা না করতে আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন,‘অতীতে হঠকারিতার জন্য আমাদেরকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। ’ আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবিতে’ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন,‘বন্ধুরা আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। আমাদের সামনে একটাই পথ। আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলন। আন্দোলনকে আরও তীব্র করে সামনের দিকে বেগবান করতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমি আমার দলের ভাই-বোনদেরকে বলতে চাই- হঠকারিতা করবেন না। অতীতে অনেক হঠকারিতার জন্য আমাদেরকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। ’

‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সেই শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং তাকে বাইরে বিদেশে পাঠাবো’, যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

সমাবেশে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ২৪ নভেম্বর সকল জেলা পর্যায়ে দলের নেতৃবৃন্দরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবে। এরপরও বেগম জিয়াকে যদি মুক্তি না দেওয়া হয়, আরও কঠোর কঠোর কর্মসূচির দিকে আমরা এগিয়ে যাবো।’

বর্তমান সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে ফেলেছে। দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। তাই আজকে আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন একসাথে গণতন্ত্রের নেত্রীকে এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করি এবং আগামী দিনে নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে আমরা একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশই প্রমাণ করেছে- এই দাবি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নয়নের মনি বিএনপি চেয়ারপারসনকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং তার চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এই সমাবেশ আরও প্রমাণ করেছে, এই সরকার কী ভয়ঙ্করভাবে আমাদের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিচ্ছে। আমাদেরকে একটা সমাবেশের জায়গা পর্যন্ত দেওয়া হয় না। সমস্ত জায়গাগুলো কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ’

এর আগে সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল ৮টা থেকে ব্যানারসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবে সমাবেত হয়। মিছিল থেকে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।

এদিকে, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে প্রেসক্লাবসহ এর আশেপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সাদা পোশাকে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলার বাহিনীসহ অতিরিক্তি পুলিশও মোতায়েন করতে দেখা গেছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।