২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:১৬
শিরোনাম:

ইউনিয়ন আ’লীগের কমিটি নিয়ে এমপির গাড়ি দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ  

আবু নাসের খাঁন (পলাশ) কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষণা নিয়ে স্থানীয় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলসহ জেলার কয়েকজন নেতাকে প্রায় ২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ সমর্থিত আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ।
শনিবার (৩ জুলাই) উপজেলার নবিয়াবাদ কুমিল্লা মডেল কলেজ মাঠে আয়োজিত দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন আওয়ালীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন শেষে দেবিদ্বার-চান্দিরা রোডের নবীয়াবাদ মডেল কলেজের সামনে রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ওই ঘটনা ঘটে।
পরে বিক্ষোভকারীদের জনরোষে পড়ে কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার পরামর্শে কমিটি ঘোষণা করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রোশন আলী মাস্টার। ঘোষণার পর বিেেক্ষাভকারীরা রাস্তার অবরোধ তুলে নেন। বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
এসময় বিক্ষোভকারীরা এমপি রাজী ফখরুলের গাড়ি অবরুদ্ধ করে “নৌকার দালালেরা হুশিয়ার সাবধান- আওয়ামীলীগের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান” বলে শ্লোগান দিতে থাকে। ঘটনার সময় এমপি রাজী ফখরুলের নেতা-কর্মীরা নিরব ভূমিকায় দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলে থেকে দেখা গেছে, বিক্ষোভ চলাকালে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাষ্টার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি ও মাহববুল আলম হানিফ এমপি’র সাথে ফোনে কয়েক দফায় কথা বলেন এবং তাদের পরামর্শে বরকামতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে মো. শাহ আলম ও  সাধারণ সম্পাদক পদে মো. রুকুনজ্জামানের নাম ঘোষণা করেন।
দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুজ্জামান মাষ্টার বলেন,  এ ব্যাপারে আমি কোন কথা বলতে চাই না, আমাকে প্রশ্ন করে লাভ নেই, কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে পারবনা।
দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ কুমিল্লা উত্তর  জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সম্মেলনে প্রার্থীদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় কাউন্সিলররা ভোট চেয়েছিল। তখন এমপি সাহেব জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাবৃন্দদের বলেন ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিটি ঘোষণা করবেন। অত:পর নেতৃবৃন্দরা একটি কক্ষে সভা করে  সভাপতি পদে শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রোকনুজ্জামানকে মনোনিত করেন। তারপর কমিটি ঘোষণা না দিয়ে এমপি চলে যেতে চাইলে নেতা-কর্মীরা পথ অবরোধ করে দেয়। সবশেষে  উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কমিটি ঘোষণা করেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি শেখ আব্দুল আউয়াল বলেন, সভাপতি পদে ৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন প্রতিদ্বদ্বী হওয়ায় ওদের আলাদাভাবে একক প্রার্থী করতে বৈঠকে বসাই, সমঝোতায় না আসায় আমরা এমপি সাহেব, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামীলীগের ৩ জন সহ-সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে উপজেলা সাধারণ সম্পাদকসহ ৭ জনকে একসাথে নিয়ে বসি। আমরা কাউন্সিলরদের পছন্দ অনুযায়ী সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ঘোষণা দেয়ার চেষ্টা করি। এ সময় এমপি সাহেব কমিটি ঘোষণা দেয়ার পক্ষে না থাকায় এবং ঢাকায় গিয়ে দু’দিন পর কমিটি  ঘোষণার কথা বলায় এ উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার বলেন- সর্বশেষ নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তটি এমপি সাহেবের মাধ্যমে ঘোষণা দিতে বললে এমপি সাহেব এখানে ঘোষণা না দিয়ে দু’দিন পর ঘোষণা দিতে বলেন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা কমিটি ঘোষণার দাবিতে এমপি সাহেবের গাড়ি অবরোধ করে রাখলে আমি মীমাংসার চেষ্টা করি। এমপি সাহেবের গাড়িতে নেতাকর্মীরা লাথি মারা ও স্থানীয় এমপিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ শ্লোগান দেওয়ায় কমিটি ঘোষণা করতে রাজি হননি এমপি রাজী ফখরুল।
Attachments area