১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:৫৮
শিরোনাম:

জাপানি দুই শিশুর মা-বাবাকে একত্রে বসতে বললেন আদালত

দুই শিশুর বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত বাবা ইমরান শরীফ ও জাপানি মা এরিকো নাকানোকে আপোসের জন্য একত্রে বসতে বললেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। মেয়েদের হেফাজতে চেয়ে বাবার করা আপিল আবেদনের শুনানিকালে আজ বৃহস্পতিবার তিনি এ পরামর্শ দেন।

মেয়েদের হেফাজতের এ মামলায় গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করেন। রায়ে জাপানি বংশোদ্ভুত ওই দুই শিশু মায়ের জিম্মায় থাকবে মর্মে রায়ে বলা হয়।

ওই রায়ে সংক্ষুদ্ধ হয়ে আপিল করেন ইমরান শরীফ। ওই আপিলের শুনানি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়।এদিন ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নাসিমা আক্তার। আর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলেন, ‘এক শিশু বাবার কাছে, আরেকজন মায়ের কাছে থাকতে চায়। আইনজীবীসহ আপনারা শিশুদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে একত্রে বসুন। বাবার আপিল গ্রহণ করা হলো। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের রায়ের নথি তলব করলাম। নথি আসলে পরবর্তী শুনানি হবে। ’

এদিন শুনানিকালে বাবার সঙ্গে মেঝ মেয়ে নাকানো লায়লা লিনা (৯) আদালতে আসে। আর মা নাকানো এরিকোর সঙ্গে আসে বড় মেয়ে নাকানো জেসমিন মালিকা।

এর আগে নাকানো লায়লা লিনা (৯) পারিবারিক এই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত একদিন একদিন করে বাবা ও মায়ের কাছে থাকবেন মর্মে সিএমএম আদালত গত ২ ফেব্রুয়ারি আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু শিশু লিনা মায়ের কাছে এ পর্যন্ত যাননি।

উল্লেখ্য, মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।

মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারপতিরা। কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্টে দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

এরপর গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তার নিষ্পত্তি হবে পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেয় আপিল বিভাগ। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে আসে।